মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

১২ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা

ঘাড় থেকে নামাতে শক্ত হোন

বাংলাদেশে আশ্রিত ১২ লাখ রোহিঙ্গা ১৭ কোটি মানুষের এই দেশের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ এবং তাদের এজেন্ট এ-দেশীয় একটি পরজীবী সম্প্রদায়ের নাকিকান্নার মুখে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে জেনে শুনে বিষপান করতে বাধ্য হয় সরকার। তার পর থেকে রোহিঙ্গা নামের ভয়ংকর বিষফোঁড়ার যন্ত্রণা বাংলাদেশের নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরাধপ্রবণ এ জনগোষ্ঠীকে যেসব দেশের অনুরোধে বাংলাদেশ আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছিল তারা রোহিঙ্গাদের ব্ল্যাকমেলিংয়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছে। বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে প্রায় ১১ লাখ নিবন্ধিত রোহিঙ্গা আছে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ৮ লাখ রোহিঙ্গা এসে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয়।

কেউ এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো কথা বললেই তাদের ওপর আসে আঘাত। ফলে সাধারণ রোহিঙ্গারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে বাধ্য হয়। কারণ যারাই দুর্বৃত্তদের বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছে, এমনকি প্রশাসন-গোয়েন্দাকে তথ্য দিয়েছে বলে সন্দেহ হয়েছে, তারাই পরে এসব গোষ্ঠীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। কক্সবাজারের ৩৪ রোহিঙ্গা শিবিরই এখন অপরাধের ঘাঁটি। গত সাড়ে পাঁচ বছরে দেড় শতাধিক খুন হয়েছে। মামলা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই শরণার্থী শিবিরে সংঘাত, ডাকাতি, ধর্ষণ, অপহরণ, খুন যেন স্বাভাবিক চিত্র। বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল যেসব পশ্চিমা দেশ, তারা নিজেদের স্বার্থে রোহিঙ্গা সমস্যা জিইয়ে রাখার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে নানা শর্ত আরোপ করে চলেছে। এ অবস্থার মোকাবিলায় বাংলাদেশকে নিজেদের স্বার্থেই ঘাড় থেকে বোঝা নামাতে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর