বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিক্ষা বাজেটে শুভংকরের ফাঁকি

ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন

শিক্ষা বাজেটে শুভংকরের ফাঁকি

'Education is the most powerful weapon which you can use to change the world.' - Nelson Mandala.

আজন্ম স্বাধীন, সম্পদবিহীন ব্রিটেন, সূর্যাস্তবিহীন রাজ্য শাসন করে সম্পদের পাহাড় গড়েছিল মেধা আর শিক্ষা দিয়ে। ইতিহাস বলে বিশ্বের যে দেশ যত বেশি উন্নতির সোপান গড়েছে, সে দেশ তত বেশি শিক্ষায় বিনিয়োগ করেছে। আকাশচুম্বী প্রত্যাশা নিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। শতভাগ নিরক্ষরতা দূরীকরণ, নারীশিক্ষা, বৈষম্যবিহীন একমুখী শিক্ষা, মেধার মূল্যায়ন, মেধা পাচার রোধ, শিক্ষকতায় মেধাবীদের সর্বাধিক মূল্যায়ন, উচ্চশিক্ষায় গবেষণা, দলীয় প্রভাবমুক্ত শিক্ষা প্রশাসন, কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন, মাদরাসা শিক্ষায় আধুনিকীকরণ, সর্বোপরি সুশিক্ষিত জাতি গঠন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে জাতি গঠনে শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে, এটিই ছিল প্রত্যাশা।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। সাড়ে ৭ কোটি মানুষের দেশ, প্রথম বাজেট, মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকা, আর শিক্ষায় বরাদ্দ ১৭৩ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ২২ শতাংশ। প্রথম বাজেটে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ বরাদ্দ। গ্রিক দার্শনিক Diogenes বলেন, ‘The foundation of every state is the education of its youth’ সে অর্থে তরুণদের দ্বারা সদ্য স্বাধীন দেশে শিক্ষার শুরুটা ছিল যথার্থ। 

২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট বাজেট ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা আর শিক্ষায় বরাদ্দ প্রায় ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ১১.৫৭ শতাংশ, মোট বরাদ্দ জিডিপির তুলনায় ১.৭৬ শতাংশ। শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি খাতের বরাদ্দ যোগ করলে এ হার দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট বাজেট ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর শিক্ষায় বরাদ্দ ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১২.০১ শতাংশ এবং জিডিপির ১.৮৩ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট বাজেট ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা আর শিক্ষায় বরাদ্দ পায় প্রায় ৭১ হাজার কোটি টাকা। শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি খাত মিলিয়ে মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার আর শিক্ষায় বরাদ্দ প্রায় ৭১ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১১.৯২ শতাংশ। জাতীয় আয়ের (জিডিপি) হিসাবে ২.০৮% অর্থাৎ বড় বাজেটে সীমিত বরাদ্দ। যদিও আমরা বরাবরই শুনে থাকি শিক্ষা খাতে প্রায় ১৫% বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ মানব সক্ষমতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। শিক্ষা খাতে বাজেটের বরাদ্দ বেশি দেখানোর জন্য অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের বাজেটকে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা ও প্রযুক্তি মিলিয়ে ৯৪ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা, অর্থাৎ মোট বাজেটের ১৫.৭% বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সার সংক্ষেপে বলা চলে- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রাক্কলিত ২৬ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষায় প্রাক্কলিত ৩৬ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে ৯ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা ও অন্যান্য অপারেটিং, উন্নয়ন সব মিলিয়ে মূলত এককভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ মোট জাতীয় বাজেটের ১১.৯২%। যদিও বলা হচ্ছে ওই অর্থবছরে জাতীয় বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ শিক্ষা খাতে! বাজেটে রূপপুর পরমাণুু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যয়ের কিছু অংশও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত। অপরদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। সব মিলিয়ে শিক্ষা, বিজ্ঞান, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বাজেটে সর্বোচ্চ ব্যয় ৯৪ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা অর্থাৎ ১৫.৭% বরাদ্দ করা হয়েছে। একেই বলা হয় শুভংকরের ফাঁকি।

প্রতি বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের সার্বিক অর্থনীতির জন্য যে চ্যালেঞ্জগুলো শনাক্ত করা হয় সেগুলো সার্বিকভাবে মোকাবিলা করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে থাকে কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যার জন্য চ্যালেঞ্জ শনাক্ত করা এবং সে অনুযায়ী জাতীয় বাজেটে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু আমরা যদি অর্থনীতি, কর্মসংস্থান বা রেমিট্যান্স, মানবসম্পদ উন্নয়ন কিংবা আর্থসামাজিক উন্নয়ন করতে চাই তাহলে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে শিক্ষা সংস্কার ও শিক্ষা বাজেটে।

প্রত্যাশা আকাশচুম্বী আর প্রাপ্তিতে অল্পে তুষ্ট কি না জানি না। স্বল্প আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পদার্পণ- এ যেন বিরাট পাওয়া। মূলত ২০০৭ সাল থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশে জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ পেতে হলে দেশের উপযুক্ত কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে হবে। তারই সিংহভাগ ১৫ বছর বয়স হতে ৬৫ বছর পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ। টেকসই উন্নয়নের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। এদিকে বিশ্বায়নের যুগে শিল্প বিপ্লবের চতুর্থ ধাপে বিশ্ববাসীকে তা মোকাবিলা করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা Artificial Intelligence, Robotics, Nano Technology এর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আয় প্রবাসীদের মাধ্যমে উপার্জিত হওয়ায় প্রশিক্ষিত মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য কারিগরি শিক্ষা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ মানবসম্পদ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার ভূমিকাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি মানব সম্পদ উন্নয়নে ব্যর্থ হই তাহলে বুমেরাং হবে জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ কিন্তু তারপরও বাজেটে এর প্রতিফলন হয়নি।

বাজেটে কভিড-১৯ এর ফলে শিক্ষার্থীরা যে নানামুখী ক্ষতির মুখে পড়েছে তার জন্য দু-তিন বছর মেয়াদি একটি শিক্ষা পুনরুদ্ধার কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা বাজেটে প্রত্যাশিত ছিল। আমরা বিগত দিনের শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট এবং সুপারিশমালা যদি পর্যালোচনা করি তাহলে সেগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে সক্রিয় দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে আদৌ প্রতীয়মান হয়নি। এবারের বাজেটেও করোনাকালীন শিক্ষায় ক্ষতিপূরণের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি এ উপমহাদেশে পাবলিক পরীক্ষায় অনাকাক্সিক্ষতভাবে ১৯৪৭ সালে পার্টিশন গ্র্যাজুয়েট, ১৯৬২ সালে অটো গ্র্যাজুয়েট, ১৯৭২ সালে অটো পাস ও নকলের অনুপ্রবেশ এবং ২০২০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অটো পাস করানো হলো ১৪ লাখ ছাত্রছাত্রীকে। সর্বশেষ ২০২১ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান প্রথম বর্ষে অটো প্রমোশন। এ অটো পাস হবে তাদের জন্য অভিশাপ। উচ্চশিক্ষার পরবর্তী ধাপে গিয়ে তারা পড়বে খাদের মধ্যে। এ শিক্ষার্থীরাই হবে আগামী দিনের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশাসন, কূটনীতিসহ জাতীয় জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে কর্ণধার। তারাই হবে সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত, দেশের নীতিনির্ধারক। কেমন করে চালাবে তারা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ? যোগ্যতার কোনো বিকল্প নেই। তাদের যোগ্যতা অর্জনের যে প্রস্তুতি পর্ব, সেটা হয়ে রইল পক্ষাঘাতগ্রস্ত।

ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকার সিংহদ্বারে লেখা আছে, ‘কোনো জাতিকে ধ্বংস করার জন্য পারমাণবিক হামলা কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের দরকার নেই। বরং সেই জাতির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় প্রতারণার সুযোগ দিলেই হবে। কারণ, এভাবে পরীক্ষা দিয়ে তৈরি হওয়া ডাক্তারদের হাতে রোগীর মৃত্যু হবে। ইঞ্জিনিয়ারদের দ্বারা দালানকোঠা, ইমারত ধ্বংস হবে এবং অর্থনীতিবিদদের দ্বারা দেশের আর্থিক খাত দেউলিয়া হবে। এ ছাড়া বিচারকদের হাতে বিচারব্যবস্থার কবর রচনা হবে। সুতরাং শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মানে হলো একটি জাতির বিলুপ্তি।’

বাজেটের শিক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দ (সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ)

বিশ্বব্যাংকের (১৯৭২-২০২০) সালের তথ্য-উপাত্তের সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে সরকারের মোট শিক্ষা ব্যয়ের, (জিডিপির শতকরা % হার) চিত্র নিম্নরূপ :

বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে বার্ষিক ব্যয় ১৯৭২ সাল থেকে ২০০০ সালের আগ পর্যন্ত ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী ছিল, যেখানে সরকারের মোট শিক্ষা ব্যয় জিডিপির শতকরা ২% অতিক্রম করে। ২০১২ সাল পর্যন্ত এ হার জিডিপির শতকরা ২% এর কাছাকাছি ছিল। ২০১২ সালের পর এ হার ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী। ২০২০ সালের শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যয় জিডিপির শতকরা ১.২৯%। ২০২১ সালে জিডিপি ২.০৮%, ২০২২ সালে জিডিপির ১.৮৩%, ২০২৩ সালে জিডিপির ১.৭%।

ইউনেস্কোর মতে, কোনো দেশের জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ করা দরকার। আমরা যদি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর শিক্ষা বাজেটে জিডিপির অনুপাতে বরাদ্দ দেখি, মালয়েশিয়ার শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট থাকে মোট বাজেটের প্রায় ২০%, যা জিডিপির প্রায় ৫/৬%। নেপালের শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেটের আকার জিডিপির ৪%। ভুটান বাজেটের ১৬.২৪% বরাদ্দ রাখে শিক্ষাক্ষেত্রে। ভারতের বাজেটে শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ থাকে জিডিপির ৩.১ শতাংশ। জিডিপির অনুপাতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমানোর সিদ্ধান্তকে ‘শিক্ষা ধ্বংসের বাজেট’ কিংবা শিক্ষা ধ্বংসের চক্রান্তের বাজেট।

তিন মেয়াদে ১৫ বছরে ক্ষমতায় থাকা সরকার বর্তমান মেয়াদে শেষ বাজেটে সফলতা তুলে ধরবে, এটাই স্বাভাবিক। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাজেট, শিক্ষা বাজেটের সফলতা বা দুর্বলতা বা আগামী দিনে সংকট সম্পর্কে কোনো বক্তব্য নেই। দেশের উন্নয়নে মৌলিক ভিত হলো শিক্ষা। আগামী দিনে বাংলাদেশ গড়ার কারিগর তৈরির সদিচ্ছার কোনো অঙ্গীকার এ বাজেটে দৃশ্যমান হয়নি। শিক্ষার সংকট বা সমস্যার সমাধানে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। মূল্যস্ফীতির কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮১ হাজার কোটি টাকা থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষা বাজেট উন্নতি হয়েছে ৮৮ হাজার কোটি টাকায়। সেই সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়ন (মুদ্রা বিনিময় হার) তুলনামূলকভাবে গত বাজেটের চেয়ে নিম্নগামী। সামগ্রিকভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তার প্রতিফলন স্বাভাবিকভাবে পেশাজীবী শিক্ষকবৃন্দের নাভিশ্বাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত নির্বাচনী বছরে বাজেটে জনসন্তুষ্টির অনেক কর্মসূচি নেওয়া হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে সমাজের একটি বিরাট অংশ, মানব সম্পদ গড়ার কারিগর, শিক্ষক সমাজের জন্য কোনো কল্যাণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি জোট সরকারের সময়ে মূল বেতনের এক চতুর্থাংশ ঈদের বোনাস দেওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়েছিল কিন্তু বিগত ১৫ বছরেও এর বৃদ্ধির কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা থাকলেও স্মার্ট শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরির বিপরীতে কাগজ, কলম, কম্পিউটার, মোবাইল, ইন্টারনেট, ব্যাগ, টিফিন বক্সের ওপর কর বসানো হয়েছে। আইএমএফের ফরমায়েশির বদৌলতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর ব্যয় কমিয়ে সরকারের ভর্তুকি কমানোর জন্য কৃষি জ্বালানি কিংবা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। অপরদিকে জিডিপির আনুপাতিক হারে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির বিষয়টি আড়ালে রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাজেটে ঘাটতি পূরণে বিদেশি নির্ভরতা ও দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ বাড়বে। তার প্রতিফলনে বেসরকারি বিনিয়োগের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিগত বাজেটে প্রায় ২ শতাংশ কমে গেছে বেসরকারি বিনিয়োগের জিডিপির পরিমাণ। যা ২৩ থেকে ২১ শতাংশে নেমেছে। আগামী অর্থবছরে বেড়ে ২৭.৮ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা শিক্ষা বাজেটের মতো আরেকটি গোঁজামিল বলে বিশেষজ্ঞদের মতামত। শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার এবং মানবিক অধিকার। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমানোর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ও সরকার শিক্ষা সংকোচনের পথে হাঁটছে। অপরদিকে শিক্ষার অধিকার থেকে নাগরিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।

লেখক : সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, চেয়ারম্যান (ইআরআই)

E-mail: [email protected]

সর্বশেষ খবর