বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ব্যাংকের সুদহার

শিল্প খাত যেন সংকুচিত না হয়

নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার পর ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের সুদের হার আর আগের মতো এক অঙ্কে সীমাবদ্ধ থাকছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক সুদ হারের সীমা প্রত্যাহার করায় ব্যবসার পরিচালনা ব্যয় বেড়ে যাবে, শিল্পায়নের গতি কিছুটা হলেও মন্থর হবে এমন আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের সভাপতির অভিমত, করোনাকালে সংকট উত্তরণে সরকার অনেক প্যাকেজ সুবিধা দিয়েছিল। কিন্তু চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি করোনার চেয়ে খারাপ। অথচ তা মোকাবিলায় কোনো প্যাকেজ নেই। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ ও দেশীয় কিছু সংস্থা এবং সমালোচকদের কথায় ঋণ সীমা তুলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে ছোট ব্যবসায়ীরা বেশি বিপদে পড়বেন। ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ তুলে নেওয়ায় শিল্পায়নের জন্য বড় সমস্যা তৈরি হবে। এখন একেক ব্যাংক একেক সুদহার নেবে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, সুদ বাড়লে উৎপাদন খরচও বাড়বে। এতে শিল্প-কারখানা টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। জনবল ছাঁটাই হবে। মানুষ চাকরি হারাবেন। মুদ্রানীতিতে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপি বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ফলে বেসরকারি খাতে অর্থায়ন কমবে। এমনিতে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বেশি দিয়েও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। সুদহার তুলে নেওয়ায় ব্যবসার খরচ বাড়লে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হবে। ব্যাংক ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত ছিল এক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ। দেশে শিল্পায়নের গতি দ্রুত করতে এ সিদ্ধান্ত অবদান রাখবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু ইতোমধ্যে করোনাকালের আঘাত আসায় ঋণহার সীমিত করার সুফল দেশের ব্যবসা ও শিল্প খাত সেভাবে পায়নি। রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বিশ্বমন্দা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটিয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাংকঋণের সুদহার বাড়ানো হলেও তা আদৌ সুফল দেবে কি না তা নিয়ে সংশয় কম নয়। সুদহার বেড়ে যাওয়ায় দেশের শিল্প খাত সংকুচিত হলে তা বড় ধরনের বিপদ বলে বিবেচিত হবে। এ বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বনের বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর