বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান

অপচয়কারীদের পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ হোক

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই তত্ত্বের সম্পর্ক অবিভাজ্য। এটি চীন-রাশিয়ার মতো দেশের জন্য যেমন সত্যি তেমন সত্যি বাংলাদেশের জন্যও। পৃথিবীর কোনো দেশে রাষ্ট্রীয় খাত সাফল্যের মুখ দেখেনি। বিভিন্ন দেশে তাদের রাষ্ট্রীয় খাত নিয়ে সাফল্যের আষাঢ়ে গল্প রটনা হলেও তা আত্মপ্রতারণার শামিল। বাংলাদেশের জনগণের জন্য রাষ্ট্রীয় খাত শুধু বোঝা নয়, সাক্ষাৎ অভিশাপ। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পোষা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় খাতের অপচয়কারীদের। রাষ্ট্রীয় খাতের কল-কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রেখে বসিয়ে বেতন দিলেও লোকসান কম হয় এটি এক বাস্তবতা। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুষতে গিয়ে এ যাবৎ সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা গচ্ছা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যে ঋণ নেয়, তার জন্য সার্বভৌম গ্যারান্টি দিতে হয় সরকারকে। চলতি বছরের মার্চ শেষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঋণের বিপরীতে দেওয়া সরকারের সার্বভৌম গ্যারান্টির দায় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে নতুন করে আরও ৩৬ হাজার কোটি টাকা দায়ের বিপরীতে সার্বভৌম গ্যারান্টি ইস্যু করেছে সরকার। এ প্রেক্ষাপটে  রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ঢালাও গ্যারান্টি কমাতে বলছে আইএমএফ। সরকারকে ঋণ সহায়তা দেওয়ার জন্য আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছে তার মধ্যে দুর্বল ও ঝুঁকিগ্রস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট উন্নয়ন এবং ঝুঁকি কমানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে ঋণদাতা সংস্থাটি। ওই শর্ত মেনে এসব প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে দেওয়া সার্বভৌম গ্যারান্টি কমানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা অবশ্য সার্বভৌম গ্যারান্টিকে সরকারের ‘দায়’ বলতে নারাজ। তারা এটিকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দায় বলে ঝুঁকির ভয়াবহতা লুকাতে ব্যস্ত। সংশ্লিষ্টদের যুক্তি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দায় পরিশোধে ব্যর্থ হলে কেবল সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে তা পরিশোধ করতে হবে। ব্যাংক ও রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো প্রতিষ্ঠান অপচয় ও লোকসানের বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারবে তা কেবল মতলববাজরাই বিশ্বাস করতে পারেন। অপচয়কারীদের পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ হওয়া দরকার।

 

 

সর্বশেষ খবর