রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

নারী নির্যাতন

সালিশির অপব্যবহার বন্ধ হোক

সালিশির নামে নারী নির্যাতন প্রায়শই ঘটে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায়। সালিশ একটি ঐতিহ্যবাহী প্রথা। সমাজে কোনো বিষয়ে বিরোধ দেখা দিলে থানা আদালতের বদলে গ্রাম্য মুরব্বিদের মধ্যস্থতায় বিরোধ মীমাংসার পদ্ধতিই হলো সালিশ। তবে গ্রাম্য মাতবর, ইউপি চেয়ারম্যান এবং প্রভাবশালীদের একাংশ যে সালিশের নামে আইন হাতে তুলে নেওয়ার অপকর্মে জড়িত এটি একটি ওপেন সিক্রেট। অনেক ক্ষেত্রে নারী নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে গ্রাম্য সালিশকে। সালিশি কার্যক্রম চালাতে গিয়ে এর সঙ্গে জড়িতরা অবৈধ অর্থ লেনদেন করেন এমন অভিযোগ প্রায়ই উচ্চারিত হয়। তারা নিরপেক্ষতা ভেঙে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো সিদ্ধান্ত নেন। আর এর ফলে সালিশের রায় পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে পড়ে। অপরাধ করেও অর্থের প্রভাবে ক্ষমা পেয়ে যায় অপরাধীরা। আর একবার নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর বিচারের আশায় ভুক্তভোগী নারী আবারও সালিশির নামে নির্যাতিত হয়েছে এমন নজির কম নয়। এতে তারা শুধু মানসিকভাবেই ভেঙে পড়ছে না, অনেকে লোকলজ্জায় আত্মহত্যাও করছে। বিভিন্ন সময় সালিশের নামে নারী নির্যাতনের শিকার নারীদের দোররা মারা, প্রভাবশালীদের চাপের মুখে গর্ভপাত করা, এমনকি যৌন নির্যাতনকারীকে শাস্তি না দিয়ে উল্টো তার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। প্রভাবশালীদের আধিপত্য এবং নারীর প্রতিনিধিত্ব না থাকায় সালিশির নামে নারীরা বিড়ম্বনার শিকার হয়। সালিশির নামে ফতোয়া দেওয়ায় গ্রামগঞ্জে বেড়ে চলেছে নারী নির্যাতন। বিশেষ করে ফতোয়াবাজদের দাপট এতই বেশি যে, তাদের বিরুদ্ধে কেউ টুঁশব্দটি করতেও সাহস পায় না। আমরা আদালতের বাইরে বিরোধ মীমাংসার উপায় হিসেবে সালিশ ব্যবস্থার পক্ষে। কিন্তু সালিশির নামে নারী নির্যাতন এবং ফতোয়াবাজি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের যে কোনো ঘটনায় প্রশাসনকে শক্ত হতে হবে। বিশেষ করে ধর্ষণ জাতীয় ঘটনায় যাতে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানো না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর