শিরোনাম
বুধবার, ২৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

জন্মান্তরবাদ

জন্মান্তরবাদ বৌদ্ধ বিশ্বাসের অন্যতম ভিত্তি। গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা অনুসারে বারবার জন্মলাভ করা মানুষের জন্য এক বিড়ম্বনা। শুদ্ধ জীবনাচার ও ভালো কাজের মাধ্যমে মানুষ বারবার জন্মলাভের বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতে পারে। গৌতম বুদ্ধকেও অসংখ্যবার জন্মলাভের বিড়ম্বনা সইতে হয়েছে। তিনি কখনো জন্ম নিয়েছেন মানুষ রূপে, কখনো হস্তি বা অন্য কোনো প্রাণী রূপে। প্রতিবারই তিনি সৎ জীবনযাপন করে পরিশেষে কৌশল রাজ্যের যুবরাজ হিসেবে জন্ম নেন ও পরবর্তীতে সাধনার মাধ্যমে বুদ্ধত্ব লাভ করেন। গৌতম বুদ্ধসহ অন্য বুদ্ধদের জীবনবৃত্তান্ত বা জন্মান্তরের কাহিনি বিবৃত হয়েছে জাতক কাহিনিতে। জাতক কাহিনির অনেকগুলো তথাগত বুদ্ধ তার শিষ্যদের কাছে বর্ণনা করেছেন। পলিভাষায় লিখিত অধ্যাপক ফৌজবোল সম্পাদিত ‘জাতকার্থ বর্ণনা’ নামের বইতে ৫৪৭টি জাতক কাহিনির উল্লেখ রয়েছে। সাধারণভাবে জাতক শব্দটি বৌদ্ধ সাহিত্যে বিশিষ্ট অর্থে ব্যবহƒত হয়। ভগবান গৌতম বুদ্ধের অতীত জীবন অর্থাৎ সিদ্ধার্থ রূপে নেপালের কৌশল রাজ্যের যুবরাজ হিসেবে জন্মগ্রহণের আগে তিনি আগের বিভিন্ন জন্মে যে জীবনযাপন করেছেন তার যৎকিঞ্চিত বর্ণনা তাতে দেওয়া হয়েছে। বৌদ্ধরা বিশ্বাস করেন, শুধু একজন্মের শুদ্ধ জীবনাচার বা কর্মফলে কারোর পক্ষে গৌতম বুদ্ধ বা অন্যান্য বুদ্ধের মতো বিভূতিসম্পন্ন সম্যক সাবুদ হওয়া সম্ভব নয়। যিনি বুদ্ধের জাতক হবেন তাকে বোধিস্বত্ব অর্থাৎ ‘বুদ্ধাঙ্কুর’ বেশে জন্মান্তরের মধ্য দিয়ে ক্রমান্বয়ে নিজ চরিত্রের উৎকর্ষ ঘটাতে হয়। এ উৎকর্ষ লাভের চরম পর্যায়ে পূর্ণ প্রজ্ঞা লাভের সাফল্য অর্জিত হয় এবং এর মাধ্যমে তিনি ‘অভিসম্বুদ্ধ’ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। অভিসম্বুদ্ধ অবস্থায় তার মধ্যে পূর্ব নিবাসজ্ঞান অর্থাৎ নিজের অতীত জন্মসম্পর্কে স্মৃতিলাভ করেন। বৌদ্ধ বিশ্বাস মতে, গৌতম বুদ্ধ এই অলৌকিক ক্ষমতা লাভ করেছিলেন। তিনি তার শিষ্যদের যখন উপদেশ দিতেন তখন তিনি তার পূর্ব জীবনের কথা তাদের শুনিয়ে নির্বাণ সমুদ্রের দিকে নিয়ে যেতেন।               

আবদুর রশিদ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর