শিরোনাম
বুধবার, ২৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

চিকিৎসা প্রতারণা

কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

চিকিৎসা একটি মানবিক পেশা। আর কোনো পেশার মধ্যে এমন গৌরব নেই। কিন্তু সব সম্ভবের এই দেশে দুর্জনদের কাছে চিকিৎসা হয়ে উঠেছে অনৈতিক ব্যবসার নাম। প্রতারণার মাধ্যম হিসেবেও ভূমিকা রাখছে এ পেশা। বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নামে অবাধে চলে যাচ্ছেতাই কাণ্ড। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হলেও সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে মানসম্মত সেবার মনোভাব প্রকট। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নামের দানবদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি প্রতিটি হাসপাতাল। আর বেসরকারি হাসপাতালে যেভাবে হোক রোগী অথবা তাদের অভিভাবকদের পকেট কাটার অভ্যাস মানুষের আস্থায় চিড় ধরাচ্ছে। অপচিকিৎসায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে অহরহ। রাজধানীর একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের গাফিলতিতে প্রসূতি ও সদ্যজাত সন্তানের মৃত্যু জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সেবার নামে রোগীদের নিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করে ব্যবসা বাড়ানো হয় এ দেশে। সে বিজ্ঞাপন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, হাসপাতালের ভিতরে-বাইরে ব্যানার-পোস্টার আকারে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এতে নষ্ট হয় রোগীর গোপনীয়তা। মনোযোগ দিয়ে রোগীর কথা না শোনার অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। অনেক চিকিৎসক বিদেশে তিন দিন, ছয় দিনের ট্রেনিংয়ে অংশ নিয়ে সেগুলোও লিখে রাখেন নেমপ্লেটের পাশে; যাতে নামের পাশে এগুলোকে ডিগ্রি মনে করে রোগী ভিড় করেন তার চেম্বারে। দেশের স্বাস্থ্যসেবায় আস্থাহীনতার কারণে বিদেশগামী রোগীর ভিড় বাড়ছে। ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দূতাবাসে মেডিকেল ভিসার জন্য যাওয়া মানুষের ভিড় ঊর্ধ্বমুখী। দেশের সরকারি হাসপাতালে অব্যবস্থাপনার কারণে মানুষ বাধ্য না হলে সেদিকে যেতে চায় না। বেসরকারিতে রয়েছে আস্থার সংকট, প্রতারণার ফাঁদ। উচ্চবিত্তের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতাকে এসব কারণ আরও উসকে দিচ্ছে। ভালো সেবার আশায় মধ্যবিত্ত এমনকি নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষও ছুটছেন বিদেশে। প্রতিবছর চিকিৎসা নিতে হাজার হাজার মানুষের বিদেশযাত্রা শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় ঘটাচ্ছে। চিকিৎসাসেবার নামে প্রতারণা বন্ধে সরকারকে সক্রিয় হতে হবে। দায়িত্বশীলদের কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জেগে ওঠাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর