সোমবার, ৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

চামড়ার দামে ধস

ট্যানারি সিন্ডিকেটের ব্যাপারে কঠোর হোন

চামড়ার বাজারে মহাধস নেমেছে ট্যানারি মালিকদের কারসাজিতে। দেশীয় শিল্প রক্ষার উদ্ভট যুক্তিতে কাঁচা চামড়া রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের মেদভুঁড়ি স্ফীত করলেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে কোরবানির চামড়া বিক্রির ওপর যারা অনেকাংশে নির্ভরশীল সেসব এতিমখানা এবং মাদরাসার লিল্লাহ বোর্ডিং। এ বছর কোরবানির গরুর চামড়া প্রথম পর্যায়ে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হলেও ছাগলের চামড়ার কোনো দাম ছিল না। ২ লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকায়। এ বছর কোরবানির চামড়ার এক বড় অংশ নষ্ট হয়েছে দাম না থাকায়। চামড়া এক সময় ছিল দেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য। সরকার আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের স্বপ্ন দেখছে। সে সক্ষমতা বাংলাদেশের থাকলেও চামড়াশিল্পের সঙ্গে থাকা কিছু লোভী মানুষের কারণে তা সম্ভব হবে কি না প্রশ্ন উঠছে। অথচ নিজস্ব কাঁচামাল, দক্ষ জনবল আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদা সবই বাংলাদেশের পক্ষে। বাধা শুধু চামড়া সিন্ডিকেট। চামড়াশিল্প একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের হাতে বন্দি। তারা যেমনটি চাচ্ছে সেভাবেই দেশের চামড়াশিল্প খাত চলছে। সবদিক বিবেচনা করে ইতিপূর্বে ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানি করার অনুমতি প্রদান করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাধা হয়ে দাঁড়ায় চামড়াশিল্প খাতের সিন্ডিকেট, আটকে যায় সরকারের চামড়া রপ্তানির উদ্যোগ। রপ্তানির জন্য প্রচুর আদেশ পাওয়া গেলেও এবং দেশে পর্যাপ্ত রপ্তানিযোগ্য ওয়েট ব্লু চামড়া মজুদ থাকলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার পরও রপ্তানি হচ্ছে না। রপ্তানিকারকদের ওপর একটি মহলের প্রচন্ড চাপ রয়েছে ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানি করা যাবে না। কারণ ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির সুযোগ পেলে দেশে চামড়ার দাম বাড়বে। কোরবানির চামড়া পানির দামে কেনা যাবে না। যেমনটি ঘটেছে গত কয়েক বছরের মতো এবারের কোরবানির ঈদেও। কোরবানির চামড়ার বাজারে মহাধস নামায় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে সরকারের সুনাম। অসৎ কিছু ট্যানারি মালিকের কাছে সরকারের সুনাম জিম্মি হওয়া শুভ লক্ষণ নয়। এ ব্যাপারে শক্ত হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর