সোমবার, ৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রাথমিক বিদ্যালয়

সর্বজনীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হোক

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করা হয় বঙ্গবন্ধুর আমলে। শূন্য হাতে তিনি এগিয়ে আসেন মানুষ গড়ার কারিগরদের পাশে। জাতীয়করণের সুবাদে শিক্ষকদের জীবন-জীবিকায় পরিবর্তন ঘটে। তাদের বেতন-ভাতা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। প্রাথমিক শিক্ষকের সরকারি চাকরি হয়ে দাঁড়ায় অতি লোভনীয়। উৎকোচ ও তদবির চাকরিপ্রাপ্তির পথ হয়ে দাঁড়ায় এক পর্যায়ে। প্রাথমিক শিক্ষার মানে ধস নামায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সর্বজনীন মর্যাদা হারায়। এগুলো হতদরিদ্রদের স্কুলে পরিণত হয়। শিক্ষক নামধারীদের একাংশের মধ্যে মাস শেষে বেতন পাওয়াই একমাত্র কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। স্বীকার করতেই হবে বর্তমান সরকারের আমলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শৃঙ্খলা ফিরেছে। শিক্ষা না দিয়েই মাস শেষে বেতন ভোগ করার পথ বন্ধ হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো গরিব বা হতদরিদ্রদের স্কুলই রয়ে গেছে। সন্তানদের বেসরকারি স্কুলে পড়ানোর ন্যূনতম সক্ষমতা যাদের আছে তারা যে তাদের সন্তানদের সরকারি প্রাথমিক স্কুলে পাঠান না এটি এক নির্মম সত্যি। এ জন্য অবশ্যই দায়ী এক শ্রেণির সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের দায়িত্বহীন মনোভাব। স্কুলে শিক্ষকদের ঠিকমতো উপস্থিত হতে সরকার বাধ্য করার পরিণতিতে ফাঁকিবাজি বন্ধ হলেও এগুলো গরিবের স্কুলের তকমা কপাল থেকে নামাতে পারছে না। দেশে অসংখ্য প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে যেগুলোর প্রয়োজনীয়তা প্রশ্নবিদ্ধ। অসংখ্য স্কুলের অবস্থা এতই হতশ্রী যে, তা দেখার কেউ আছে বলে মনে হয় না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে নির্বিবাদে। টেবিল চেয়ার বেঞ্চ গায়েব হওয়ার ঘটনাও প্রায়ই ঘটছে। সাম্প্রতিককালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগ শুরু হয়েছে। উৎকোচ বাণিজ্য বন্ধ না হলেও অযোগ্যদের নিয়োগ যে রোধ করা সম্ভব হয়েছে এটি একটি বড় সাফল্য। শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ উন্নয়ন করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো যাতে সর্বজনীন হয়ে ওঠে তা নিশ্চিত করা জরুরি। এ জন্য যা কিছু প্রয়োজন করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর