মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

নদনদীতে পানি বাড়ছে

বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিন

বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবেই ঝড়বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের দেশ। খরাও কখনো কখনো এ দেশে হানে মহাছোবল। বন্যা এ দেশের মানুষের জন্য অতীতে অসংখ্য দুর্ভোগ ডেকে এনেছে। এযাবৎ এ ভূখন্ডে যত দুর্ভিক্ষ ঘটেছে তার সবকটির পেছনে ছিল খরা ও বন্যার ভূমিকা। এ বছর ভয়াবহ খরার পর উজান থেকে আসা ঢল আর অতিবৃষ্টিতে দেশজুড়ে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে সিলেটসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোর নদনদীর পানি বাড়ছে। সিলেট সিটি করপোরেশন ও সুনামগঞ্জ শহরে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। সুনামগঞ্জের গোবিন্দপুর গ্রামে বন্যার পানি বাড়ায় আতঙ্কে নৌকা পার হতে গিয়ে হাওরে ডুবে তিন ভাইবোনের মৃত্যু হয়েছে। নেত্রকোনার কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে বইছে। সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন জনপদের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে এলাকাবাসী। সুরমা, কুশিয়ারা, লোভা, ধলাইসহ জেলার বিভিন্ন নদনদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে। নেত্রকোনার কলমাকান্দায় অব্যাহত রয়েছে পাহাড়ি ঢল। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারী বর্ষণ। নদীর নাব্য দিন দিন কমে যাওয়ায় প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চলসহ নদীতীরবর্তী এলাকা। গ্রামীণ সড়ক যাচ্ছে ডুবে। গত এক সপ্তাহের পাহাড়ি ঢল আর টানা বর্ষণে কলমাকান্দার গণেশ্বরী ও দুর্গাপুরের সোমেশ্বরীর শাখা উব্দাখালী নদীতে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। চলতি বছর নজিরবিহীন খরা কৃষির জন্য বিসংবাদ ডেকে এনেছে। কাঁচা মরিচের দাম ১ হাজার টাকায় পৌঁছানোর কারণ খরার কশাঘাত। ধান উৎপাদন সেচব্যবস্থার কারণে খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও সবজি ও রবিশস্য উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। খরার পর বন্যা দেখা দিলে কৃষকের মেরুদন্ডে তা বড় ধরনের আঘাত হানবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সাহসী ভূমিকা রাখতে হবে প্রতিটি মানুষকে। প্রশাসনকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কীভাবে বন্যার ধকল কাটানো যাবে সে বিষয়ে প্রস্তুতি থাকতে হবে। বন্যার ছোবল থেকে রক্ষা পেতে নদনদী খনন করে পানিধারণের ক্ষমতা বাড়াতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর