বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ঋণখেলাপি দমনে চাই আরও কঠোরতা

ঋণখেলাপিরা দেশের অর্থনীতির সাক্ষাৎ শত্রুতে পরিণত হয়েছে। ব্যাংকে যে অর্থ থাকে তা দেশবাসীর সঞ্চিত অর্থ। এ অর্থ থেকেই ব্যাংকগুলো ঋণ দেয় এবং প্রাপ্ত সুদ বা মুনাফা পেয়ে লাভবান হয়। ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ নিয়ে কেউ তা সময়মতো পরিশোধে অনীহা দেখালে ঋণখেলাপিতে পরিণত হয়। ব্যাংকে থাকা দেশবাসীর অর্থ ব্যাংকের অসৎ পরিচালনা পর্ষদ সদস্য এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে উপযুক্ত জামানত ছাড়াই ঋণ নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটছে সব সম্ভবের এই দেশে। অর্থ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন এমন থিপ অব বাগদাদ মার্কা দুর্বৃত্তের সংখ্যা কম নয়। ঋণখেলাপিদের কারণে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা যখন ঝুঁকির মুখে তখন ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ঋণ বিতরণকারী ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আবেদনে সম্প্রতি আদালত এ ধরনের বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে আটক হয়েছেন নিউইয়র্কের আবুল কাশেম। তিনি একটি ব্যাংকের অনুমতিও পেয়েছেন। এ ছাড়া আরও কিছু ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে এখন আদালত ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তবে অভিজ্ঞজনদের মতে, ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে শুধু দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেই হবে না। দ্রুত বিচারের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বাতিল ও সম্পত্তি ক্রোক করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইতোমধ্যে শীর্ষ ঋণখেলাপি চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী গ্রুপ ইলিয়াছ ব্রাদার্সের দুই পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত। ঢাকা ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ২৫ মে এ আদেশ দিয়েছেন। ২৩৪ কোটি টাকার ঋণখেলাপির মামলায় চট্টগ্রামের পাঁচ ব্যবসায়ীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ঋণখেলাপিদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দৃশ্যত একটি ভালো খবর। তবে তারা যাতে কোনোভাবে দেশত্যাগ করতে না পারেন সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ঋণখেলাপিদের গ্রেফতার এবং পরিবারের সদস্যদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারলে সেটি হবে অর্থনৈতিক দুর্বৃত্ত দমনের সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর