রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

শান্তি ও সম্প্রীতির শিক্ষা দেয় ইসলাম

মুফতি রফিকুল ইসলাম আল মাদানি

শান্তি ও সম্প্রীতির শিক্ষা দেয় ইসলাম

শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলাম। সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও চরমপন্থা এ ধর্ম সমর্থন করে না। অসহিষ্ণুতা ও বাড়াবাড়ির অস্তিত্ব এ ধর্মে নেই। যে কোনো ধর্মীয় গ্রন্থ ও উপাসনালয়কে অবমাননা করা, মন্দ বলা ও ক্ষতিসাধন করা ইসলাম ধর্মে অপরাধ। কোরআনে কারিমে মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘আর তোমরা তাদের মন্দ বোলো না, যাদের তারা আরাধনা করে আল্লাহকে ছেড়ে। তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে মন্দ বলবে।’ (সুরা আল আনআম-১০৮) অন্য আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে জোরজবরদস্তি নেই; নিঃসন্দেহে সত্য পথ ভ্রান্ত পথ থেকে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে।’ (সুরা আল বাকারাহ-২৫৬) ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন পরম সহিষ্ণুতা ও ধর্মীয় সম্প্রীতির মূর্ত প্রতীক। ক্ষমা করতেন তিনি চিরশত্রু এবং প্রকাশ্য ঘাতককেও। শত্রুরা অসুস্থ হলে তাদের তিনি সেবা করতেন, বিপদে তাদের সহায়তা করতেন। যুদ্ধ চলাকালেও পরধর্মের উপাসনালয় অবমাননা করতে নিষেধ করতেন। শ্রমিক ও যুদ্ধবন্দিদের প্রতি সর্বোচ্চ মানবতার পরিচয় দিতেন। মহানবী (সা.)-এর উদারতায় একদিন তারা ইসলামের পতাকাতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। আমার গবেষণামতে, প্রতিটি ধর্মেই এমন শিক্ষা দেওয়া উচিত। উচিত সবাইকে অন্য ধর্মের প্রতি পরম সহিষ্ণু এবং একান্ত উদার হওয়া। অন্যথায় ধর্মীয় ও সামাজিক আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক বিষয়। সাম্প্রতিককালে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কখনো মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ আল কোরআন অবমাননা, কখনো ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমানা অথবা ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার ঘটনা নিয়মিতই ঘটাচ্ছে। বিগত ২১ জানুয়ারি সুইডেনের উগ্রপন্থি বিতর্কিত নেতা রাসমুস পালুদান স্টকহোমে তুর্কি দূতাবাসে কোরআনে কারিমে অগ্নিসংযোগ করেন। সে সময়ে তার দলের প্রায় ১০০ সমর্থক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে প্রতিরক্ষা দেয়। এ ধরনের ঘটনা সুস্থ বিবেকসম্পন্ন মানুষের বিবেচনায় অবশ্যই ন্যক্কারজনক। কোনো সভ্য মানুষ এমন জঘন্য অপকর্ম মেনে নিতে পারে না। তা ছাড়া পৃথিবীর সব ধর্মগ্রন্থই নিজ নিজ অনুসারীদের কাছে অতি মর্যাদা ও সম্মানের বস্তু। তাই ধর্মগ্রন্থ অবমাননা সব ধর্মে নিন্দনীয় কাজ। এমন অপকর্ম সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় শান্তি অবনতির জন্য ষড়যন্ত্রমূলক চক্রান্ত। যারা এসব গর্হিত কাজ সূচনা করে এবং উসকানি দেয় তারাই প্রকৃত অপরাধী। যারা এ ধরনের অরাজকতামূলক অপরাধে পৃষ্ঠপোষকতা করে তারাও অপরাধী হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের উগ্রবাদীরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আড়ালে পরিকল্পিতভাবে বিশ্বব্যাপী উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যাচ্ছে। সচেতন জনগণ এর রহস্য উদঘাটনের প্রয়োজন অনুভব করছে। পড়াশোনা করছে ইসলাম নিয়ে। জানতে পারছে ইসলামের শান্তিশৃঙ্খলার অনুপম আদর্শ। তাই তো আজ বিশ্বব্যাপী ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জগদ্বিখ্যাত বহু তারকাও দীক্ষিত হচ্ছেন এই শান্তির ধর্মে।

লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা

সর্বশেষ খবর