সোমবার, ১০ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

খেলাপি ঋণ

অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ

খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিশাল অঙ্কের ঋণখেলাপি দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা বলেও বিবেচিত হচ্ছে। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে বারবার সমালোচিত হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণের বিষয়টি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে উচ্চ খেলাপি ঋণকে ব্যাংক খাতের বোঝা হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। চলতি বছর ৩১ মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২১ কোটি টাকা, যা তিন মাস আগের তুলনায় ৯ শতাংশ এবং এক বছর আগের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে সর্বোচ্চ খেলাপি ঋণ ছিল এটি, যা ওই সময় মোট বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। চলতি বছর ২১ জুন জাতীয় সংসদে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের সংজ্ঞায়িত করে নতুন আইন পাস হয়েছে। আইনে ঋণ শোধ করছেন না এমন গ্রাহকদের মধ্যে যারা সামর্থ্য থাকার পরও শোধ করবেন না এবং যারা জালিয়াতি, মিথ্যা তথ্য ও প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ নেবেন, তারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন। এক উদ্দেশ্যে ঋণ নিয়ে অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার এবং ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া জামানত হস্তান্তর করলেও ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন। প্রতিবেদনে অতি উচ্চমাত্রার ঋণখেলাপির পাশাপাশি টাকার অবমূল্যায়ন ও ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতিকে অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল্যায়নে বলা হয়েছে- মুদ্রার অবমূল্যায়ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দাম সমন্বয়ের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে, ফলে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। দেশের অর্থনীতি কতটা চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে তা স্পষ্ট। টাকার অবমূল্যায়ন ও মূল্যস্ফীতির সরাসরি শিকার সাধারণ মানুষ। তাদের রক্ষায় সরকার সক্রিয় হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর