জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনে উৎসে কর একসঙ্গে প্রায় ২৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এমন অভিযোগ আবাসন ব্যবসায়ীদের। এ ব্যবসাসংশ্লিষ্টদের বক্তব্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৫০ থেকে ৬০ গুণ বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা চোখে শর্ষে ফুল দেখছেন। তারা নির্বাচনের বছরে এমন একটি প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তকে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলেও অভিহিত করেছেন। কারণ এর ফলে আবাসন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২০ হাজার শিল্পকারখানা বন্ধ ও ১ কোটি মানুষ বেকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অতিরিক্ত এ করারোপ আবাসন খাতের জন্য ভয়াবহ হুমকি বলেও মনে করছে বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তারা এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ব্যবসায়ীদের অভিমত, জমি নিবন্ধনে অতিরিক্ত করারোপে দেশের আবাসন খাতে বিনিয়োগ কমবে। বাড়বে বিদেশে অর্থ পাচার। আগে মানুষ জমিতে বিনিয়োগ লাভজনক ও নিরাপদ মনে করতেন। এ অতিরিক্ত কর বৃদ্ধিতে ঢাকা বা বড় শহরে জমিতে বিনিয়োগ অলাভজনক হয়ে উঠবে। এ অবস্থায় জমি বেচাকেনা কমবে। এতে সরকার হারাবে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব। একটি বাড়ি বা ভবন তৈরিতে ইট, বালি, সিমেন্ট, রড, টাইলস, বৈদ্যুতিক সামগ্রীসহ ৫ শতাধিক পণ্য ব্যবহার হয়। রেজিস্ট্রেশনের কারণে জমি ক্রয় খরচ বাড়লে বাড়ি নির্মাণও কমে যাবে। আর বাড়ি নির্মাণ কমে গেলে সংযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বেকারত্বের এই দেশে এমন বাস্তবতাবিবর্জিত সিদ্ধান্ত লাখ লাখ মানুষকে বেকার করবে। জমি ও ফ্যাট নিবন্ধনে উৎসে কর মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় যারা মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের স্বপ্ন দেখছিলেন তাদের সিংহভাগই মুখ থুবড়ে পড়েছেন। কারণ ঢাকা, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ শহরে এর আগে উৎসে কর ছিল দলিল মূল্যের ওপর ৪ শতাংশ। ২০২৩-২৪ সালের বাজেটে তা ৮ শতাংশ বা বিভিন্ন এলাকার ওপর ভিত্তি করে কাঠাপ্রতি ২০ লাখ ও অন্যান্য হারে নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি মানুষের জমি ও ফ্যাট কেনার আগ্রহে ছাই ঢেলে দিয়েছে। মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই প্রাপ্তির সুযোগ কেড়ে নিয়েছে যে ভুল সিদ্ধান্ত, তা পুনর্বিবেচনা করা হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।