শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

মানুষ হওয়া : মানুষের মতো মানুষ

সুমন পালিত

মানুষ হওয়া : মানুষের মতো মানুষ

দুনিয়ার ইতিহাসে অনেক নামিদামি মানুষ অতি সামান্য অবস্থা থেকে শীর্ষপদে পৌঁছেছেন। বিশ্ব ইতিহাসের বড় বড় নায়ক-নায়িকাদের সবাই নিজ যোগ্যতা ও প্রতিভাগুণে বড় হয়েছেন। এদের কেউ হয়তো উঠে এসেছেন বস্তি থেকে, কেউবা ছিলেন পথের মানুষ। মুচি, দিনমজুর হিসেবে জীবন শুরু করলেও তারা জীবন জয়ের পাশাপাশি বিশ্বজয়ের কৃতিত্বও দেখিয়েছেন। ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেন মাইকেল সাতা। পরিচ্ছন্নতা কর্মী বা সুইপার বলে যাদের অভিহিত করা হয় সাতা ছিলেন তাদেরই একজন। লন্ডনের ভিক্টোরিয়া স্টেশনে অন্যসব পরিচ্ছন্নতা কর্মীর মতো তিনিও ঝাড়ামোছার কাজ করতেন। পরে কাজ করেছেন কুলি হিসেবে। কাজের ফাঁকে খণ্ডকালীন পড়াশোনাও করেছেন। সুইপারের কাজ করলেও মাইকেল সাতার চোখে ছিল বড় হওয়ার স্বপ্ন। দেশের মানুষের কল্যাণ চিন্তা তাকে সারাক্ষণ আচ্ছন্ন করে রাখত। সেই মাইকেল সাতা জাম্বিয়ার সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন। খনিজসম্পদে ভরপুর জাম্বিয়ার মানুষ দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার কারণে দুনিয়ার অন্যতম গরিব দেশ। সাতা দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বলেন, লন্ডনের রেলস্টেশনের চেয়েও তিনি তার মাতৃভূমিকে বেশি পরিচ্ছন্ন রাখবেন। বলেন, দুর্নীতিকে ঝেটিয়ে দূর করাই হবে তার প্রথম কাজ।

একজন ঝাড়ুদারের দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার ঘটনায় জাম্বিয়ার অভিজাতরা নাক ছিটকিয়েছেন। কিন্তু এ অর্বাচীনরা বুঝতে চাননি মাইকেল সাতা কারও দয়া নয়, নিজের যোগ্যতায় দেশের সর্বোচ্চ পদে পৌঁছেছেন। কাজের মাধ্যমে দেশের মানুষের মনজয়ে সমর্থ হয়েছেন। দুনিয়ায় যারা সেরাদের সেরা তাদের অনেকেরই ইতিহাস মাইকেল সাতার মতো।

আমেরিকার ‘মহান প্রেসিডেন্ট’ আব্রাহাম লিংকন প্রথম জীবনে ছিলেন কাঠুরিয়া। অসামান্য মেধা ও কর্তব্যপরায়ণতা তাকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে উন্নীত করে। মার্কিনিদের মতে, লিংকন শুধু প্রেসিডেন্টই নন, এক আদর্শেরও নাম। আমেরিকায় বহু প্রেসিডেন্ট দেশ শাসন করেছেন ও করবেন। তাদের কেউই লিংকনকে কখনো অতিক্রম করতে পারবেন কি না সন্দেহ। এ দেশেরই আরেক প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট ছিলেন পঙ্গু। দেশের অর্থনীতি যখন বিধ্বস্ত, সে অবস্থায় তিনি হাল ধরেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে মিত্রশক্তির পক্ষে আমেরিকার যোগদান যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। শারীরিকভাবে অক্ষম হলেও প্রবল ইচ্ছাশক্তি রুজভেল্টকে একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তুলে ধরে। আমাদের এই উপমহাদেশে একসময় ক্রীতদাস বা হাবসীদের শাসন ছিল। যাদের অনেকেই প্রথম জীবনে ক্রীতদাস হিসেবে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন। আপন যোগ্যতাবলে পরবর্তীতে নিজেকে মেলে ধরতে সক্ষম হন। এদের মধ্যে সুলতান ইলতুতমিস, কুতুবউদ্দিন আইবেক শাসক হিসেবে ইতিহাসে যথেষ্ট মর্যাদার অধিকারী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ছিলেন গরিব ঘরের সন্তান। কতটা গরিব ছিল শাস্ত্রীজির পরিবার? ছোটবেলায় তাকে স্কুলে যেতে হতো বাড়ি থেকে বহু দূরে। পথে ছিল ছোট্ট একটি নদী। নৌকায় নদী পার হতে মাত্র ১ পয়সা লাগত। এ সামান্য পয়সাও তার দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। তাই তিনি জামা, প্যান্ট ও বই হাতে নিয়ে নামতেন পানিতে। তারপর সাঁতার কেটে পার হতেন নদী। ছোটবেলায় দারিদ্র্যের মধ্যে তিনি যে মানুষ হয়েছেন, তা প্রতিষ্ঠার শীর্ষে উঠেও ভুলে যাননি। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী যখন প্রধানমন্ত্রী তখনও তার জীবনযাপন ছিল একজন দরিদ্র মানুষের মতোই। বিশাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন ড. মনমোহন সিং। পশ্চাৎপদ ভারত বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার পথে দ্রুত ছুটে চলছে মনমোহন সিংয়ের প্রদর্শিত পথে। ফেরিওয়ালার ছেলে মনমোহন ছোটবেলায় পড়াশোনা করতেন লাইট পোস্টের নিচে বসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, অর্থমন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী পদে বসেও বিলাসিতা তাকে স্পর্শ করতে পারেনি।

মানুষের মতো মানুষ হিসেবে যারা বিশ্ব ইতিহাসে নন্দিত তাদেরই একজন ভারতের একাদশ প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালাম। পেশায় যিনি একজন বিজ্ঞানী। পরমাণু ও মহাশূন্য গবেষণায় তার সাফল্য প্রায় আকাশ ছোঁয়ার মতো। ভারতীয় এটম বোমার জনক ভাবা হয় এই বিজ্ঞানীকে। দরিদ্র পরিবারে জš§গ্রহণকারী আবদুল কালামকে তার বাবা স্কুলে ভর্তি করেন বুকভরা আশা নিয়ে। কিন্তু মাত্র ১০ বছর বয়সেই পড়াশোনার পাশাপাশি জীবনযুদ্ধেও জড়িত হয়ে পড়েন। পড়াশোনা চালানোর খরচ মেটানো ও বাবা-মাকে সংসার চালাতে সাহায্য করার জন্য হকারির কাজ শুরু করেন তিনি। ভোরে লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পত্রিকা পৌঁছে দিতেন। এহেন আবদুল কলাম তার যোগ্যতাগুণে ভারতের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ও প্রেসিডেন্ট- যখন যে পদ তিনি গ্রহণ করেছেন সে পদকেই মহিমান্বিত করেছেন।

শ্রীলঙ্কার পরলোকগত প্রেসিডেন্ট প্রেমাদাসা ছিলেন বস্তির সন্তান। বাবা ছিলেন ধোপা। অত্যন্ত গরিবি অবস্থায় কেটেছে তার ছোটবেলা। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে প্রেমাদাসা ভর্তি হতে যান মিশনারি হাইস্কুলে। স্কুলের রেক্টর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী প্রেমাদাসাকে ভর্তি করতে আপত্তি জানান। বলেন, এ স্কুলে শুধু খ্রিস্টান ছাত্রদের ভর্তি করা হয়। কিন্তু প্রেমাদাসা ছিলেন নাছোড়বান্দা। তিনি রেক্টরকে বললেন, ‘স্যার আমাকে তো অনেক বড় হতে হবে। পড়াশোনার সুযোগ না পেলে বড় হব কীভাবে?’ রেক্টর প্রেমাদাসার কথায় মুগ্ধ হয়ে তাকে স্কুলে ভর্তি করেন। ভর্তি ফরমের মন্তব্য স্থানে লেখেন- ‘এ ছেলে যে কত বড় হবে তা একমাত্র ঈশ্বরই জানেন।’ কৃষ্ণ-আফ্রিকার মুক্তি আন্দোলনের এক মহান নাম শ্যাম নাজোমা। আফ্রিকার মুক্তিদূত হিসেবে নেলসন ম্যান্ডেলার পাশাপাশি উচ্চারিত হয় তার নাম। স্বাধীন নামিবিয়ার রাষ্ট্রপিতা ও প্রেসিডেন্ট নাজোমা একসময় ছিলেন সামান্য নাপিত। সেলুনে চুল-দাড়ি কাটতে কেউ এলে তিনি তাদের সঙ্গে কীভাবে দেশের স্বাধীনতা অর্জন করা যায় এ নিয়ে মতবিনিময় করতেন। অবশেষে একদিন সেলুন ফেলে দেশের কাজে নেমে পড়েন। গড়ে তোলেন রাজনৈতিক দল। সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামও শুরু হয় তার নেতৃত্বে। অবশেষে আসে স্বাধীনতা।

দুনিয়ার অন্যতম সেরা জাতি হিসেবে ইংরেজদের পরিচয় স্বীকৃত। এক সময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যেত না। এই ব্রিটেনেরই সাবেক প্রধানমন্ত্রী জন মেজর। বাবা ছিলেন সার্কাস দলের সামান্য কর্মী। অর্থাভাবে অষ্টম শ্রেণির বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি বাসের কন্ডাক্টর হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু অঙ্কে কাঁচা-এ যুক্তিতে চাকরি হয়নি। পরবর্তীতে এই জন মেজরই ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী হন। যে যুবকটি অঙ্কে পারদর্শী নয় বলে বাসের কন্ডাক্টর হতে পারেনি, তিনিই ব্রিটেনের মতো দেশে অর্থনীতির হাল ধরেন যোগ্যতার সঙ্গে। এখানেই থেমে যায়নি জন মেজরের অগ্রযাত্রা। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী পদেও অধিষ্ঠিত হন তিনি।

ফুটবলের কিংবদন্তি পেলে, ম্যারাডোনা, রোনালদো তিনজনই বস্তির ছেলে। এদের ছোটবেলা কেটেছে ছেঁড়া জামাকাপড় পরে। রোনালদোর বাবা-মা এতই গরিব ছিলেন যে, তার জন্মের পর নাম রেজিস্ট্রি করতে দুই দিন দেরি হয়। রেজিস্ট্রিকৃত জš§ তারিখের দুই দিন আগে যে তার জš§ তা তিনি স্বীকার করেছেন অকপটে। শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেট দলের সুপারস্টার জয়সুরিয়ার বাবা ছিলেন একজন জেলে।

বিশ্বসাহিত্যের কৃতী পুরুষ ম্যাক্সিম গোর্কি কামারশালা এমনকি জুতার দোকানেও কাজ করেছেন। কিন্তু এ আভিজাত্যহীনতা আপন প্রতিভাকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়নি। দুনিয়ার দেশে দেশে গোর্কি সাহিত্যরসিকদের কাছে প্রাতঃস্মরণীয় নাম। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামও রুটির দোকানে এমনকি লোকের বাড়িতে কাজ করেছেন। মুসলিম বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক আল-ফারাবী ছিলেন বাগানের মালি। শেখ সাদী এক সময় ক্রীতদাস হিসেবে অমানবিক জীবনযাপন করতেন। দার্শনিক ব্রাউন তাঁতি হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করতেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. লিভিং স্টোন, ফোর্ড মোটর গাড়ি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বের অন্যতম ধনী হেনরি ফোর্ড কারখানার মজুর হিসেবে জীবন শুরু করেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা ভারতীয় মনীষী মহামতি গোখেল ছিলেন গরিব ঘরের ছেলে। ফিলিপাইনের জনপ্রিয় সাবেক প্রেসিডেন্ট মিসেস আরোয়ার পিতাও একসময় সে দেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বিরোধীরা আরোয়াকে প্রায়ই ধোপানীর নাতনি বলে বিদ্রুপ করতেন। অবশ্য এই বিদ্রুপকে গর্বের ব্যাপার বলে ভাবতেন এই সাবেক ফিলিপিনো প্রেসিডেন্ট। তিনি নিঃসংকোচে স্বীকার করতেন তার দাদি ছিলেন একজন গরিব ধোপানী। বলতেন এ পরিচয়ে তিনি কুণ্ঠিত নন। গরিব ঘরে জš§ নিয়ে যারা নিজ যোগ্যতায় শীর্ষ পদে উঠেছেন তাদেরই একজন লাতিন আমেরিকার দেশ উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট জোসে মুজিকো। প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পরও যিনি নিজেকে কৃষক বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতেন। দেশের সর্বোচ্চ পদে থাকা অবস্থায়ও যার জীবনযাপন অন্য সব কৃষকের মতো। জোসে মুজিকোর জš§ এক গরিব কৃষক পরিবারে।

জোসে মুজিকো বলেছেন, লোকে তাকে দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট বলে অভিহিত করে। কিন্তু তিনি আদৌ দরিদ্র নন। দরিদ্র তারা যারা সারাটা জীবন কেবল ভোগের জন্য খাটে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, উরুগুয়ের এই প্রেসিডেন্টের কোনো সঞ্চয় ছিল না। উরুগুয়ের নিঃসন্তান সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং তার সিনেটর স্ত্রীর সবচেয়ে দামি সম্পত্তি হলো ১৯৮৭ সালে কেনা এক হাজার ৯০০ ডলার দামের একটি ভক্সওয়াগন গাড়ি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান একজন স্বনামখ্যাত অর্থনীতিবিদ। তার জন্ম এক হতদরিদ্র পরিবারে। ১৯৬৫ সাল। গরিব এক ছেলে নিজের মেধা ও যোগ্যতায় ক্যাডেট কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। কিন্তু গ্রাম ছেড়ে শহরে পড়তে যাওয়ার টাকা নেই। নেই পোশাক। গ্রামের স্কুলের শিক্ষকরা তার জন্য হাটে গিয়ে চাঁদা তুললেন। এভাবে জোগাড় হলো ১৫০ টাকা। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান আতিউর রহমানের পরবর্তী জীবন শুধু সাফল্যের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাফল্যের শিখরে উঠেও তিনি তার অতীতকে ভুলে যাননি। দুনিয়ার কৃতী পুরুষের সংখ্যা কম হলেও চেহারাসর্বস্ব মাকালদের সংখ্যা কম নয়। পোশাকি চেহারা বা কৃত্রিম আভিজাত্যের প্রতি মোহগ্রস্তদের জন্য শেখ সাদীর সেই গল্পটি স্মরণীয়। ‘শেখ সাদী একবার রাজদরবারে যাচ্ছিলেন। যেতে যেতে পথে সন্ধ্যা নামল। বাধ্য হয়ে তিনি আশ্রয় নিলেন এক আমিরের বাড়িতে। তার পরনে ছিল অতি সাধারণ পোশাক। আমিরের লোকজন তাকে তেমন পাত্তাই দিল না। কোনো আদর-যত্নও মিলল না সেখানে। রাতটা কোনোরকমে কাটিয়ে ভোর হতেই শেখ সাদী যাত্রা শুরু করলেন। মনে তার একরাশ ক্ষোভ। কদিন পর রাজদরবার থেকে বাড়ি ফেরার পথে একই আমিরের প্রাসাদে তিনি আশ্রয় নেন। তার পরনে ছিল শাহেন শাহর দেওয়া মূল্যবান পোশাক। সম্মানিত অতিথিকে দেখে আমির হাঁকডাক শুরু করেন। নিজের পাশে বসিয়ে খানাপিনার ব্যবস্থা হয়। ভৃত্যরা নিয়ে আসে পোলাও, কোরমা, কাবাব আরও কত কিছু। শেখ সাদী খেতে বসলেন। কিন্তু তাজ্জব ব্যাপার। তিনি খাবার মুখে না দিয়ে জামার পকেটে ভরতে লাগলেন। মেহমানের আচরণে আমিরের চোখ তো ছানাবড়া। তিনি বিনীতভাবে এ আচরণের কারণ জানতে চাইলেন। জবাবে সাদী বললেন, জনাব এ খাবার তো আমার পোশাকেরই প্রাপ্য। আমির পূর্বাপর শুনে লজ্জিত হন। বারবার ক্ষমা চান শেখ সাদীর কাছে।’

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক

ই-মেইল : [email protected]

সর্বশেষ খবর