শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডেঙ্গুর ভয়াল থাবা

ব্যর্থতা লুকানোর কসরত কাম্য নয়

ডেঙ্গুর ভয়াল থাবা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। সময়মতো মশা নিধনের ব্যর্থতায় জিম্মি হয়ে উঠেছে রাজধানীর দেড় কোটি মানুষ। ঢাকার বাইরেও থাবা বিস্তার করছে এডিস মশা নামের ভয়াবহ কীট। চট্টগ্রামে ড্রোন ব্যবহার করেও ঠেকানো যাচ্ছে না ডেঙ্গুর থাবা। ঝড়ের গতিতে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। দেশের সব বড় নগরীতেও কমবেশি ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। দেশের হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর ভিড়। বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ হাজার ২৩৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে জুলাইয়ের ১২ দিনেই মারা গেছেন ৪৩ জন। বুধবার সকাল পর্যন্ত দেশের হাসপাতালগুলোতে ৩ হাজার ৭৯১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৬৯ জনে। এক দিনের ব্যবধানে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে ২৭৮ জন। বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বেশি ৪৮১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলেন রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অতিরিক্ত ডেঙ্গু রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে অনেক হাসপাতাল। ব্যাহত হচ্ছে অন্যান্য রোগের চিকিৎসা কার্যক্রম। কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, কোন এলাকাগুলো থেকে সবচেয়ে বেশি রোগী হাসপাতালে আসছেন তা হিসাব করলেই হটস্পটগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব। বৃহস্পতিবার ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ৭৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। ঢাকার বাইরে ৪৮৩। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর চেয়ে কয়েকগুণ। মশা নিধনে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থতার শিরোপা অর্জন করলেও উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। কোনো বাসগৃহে বালতি বা অন্য কোথাও এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করে কৃতিত্ব দেখানো হচ্ছে। আমরা সুনিশ্চিতভাবে নাগরিক সচেতনতার পক্ষে। মশা নিধনে শুধু দুই সিটি কর্তৃপক্ষ নয়, নাগরিকদেরও সচেষ্টা হওয়াকে যৌক্তিক মনে করি। তবে যারা মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে কুম্ভকর্ণের ঘুমে, তাদের অভিযান চালানোকে প্রহসন বলেই ভাবতে চাই। যা কোনোভাবেই বাঞ্ছিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর