মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

জমজম কূপ

দুনিয়ায় আল্লাহ রব্বুল আলামিনের যত বিস্ময়কর নিদর্শন রয়েছে জমজম কূপ তার একটি। প্রায় ৫ হাজার বছর আগে পবিত্র কাবাঘরের সন্নিকটে এ মহা বরকতময় কূপটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইবরাহিম (আ.) বিবি হাজেরা ও দুগ্ধপোষ্য শিশু ইসমাইল (আ)-কে জনমানবহীন খানায়ে কাবার কাছে নির্বাসনে রেখে যেতে আদিষ্ট হয়েছিলেন। সামান্য পানি ও কিছু খেজুরসহ তিনি তাদের সেখানে রেখে যান। বুকের দুধ নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার পর ইসমাইল (আ.) যখন ক্ষুধায় কাতর হয়ে ছটফট করছিলেন, তখন তিনি দুগ্ধপোষ্য শিশুর জীবন বাঁচাবার জন্য একবার সাফা পাহাড়ের ওপর আরেকবার মাওয়া পাহাড়ের ওপর, এভাবে ছোটাছুটি করছিলেন। একসময় দেখতে পেলেন, ছেলের পায়ের আঘাতে পানির ফোয়ারা উথলে উঠছে। চারদিকে তিনি বালু ও পাথর দিয়ে পানির প্রবাহ থামালেন। সেই কুদরতি পানির ঝরনাধারাটিই হচ্ছে জমজম কূপ। এই পানি কখনো বন্ধ হবে না। বিরতিহীনভাবে পৃথিবীবাসীকে তৃপ্ত করে চলবে। ভারী মোটরের সাহায্যে ঘণ্টায় ৮ হাজার লিটার পানি এখান থেকে উত্তোলন করা হয়। দিনে ৬৯১ দশমিক ২ মিলিয়ন লিটার পানি সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরপরও তা থেকে একটুও কমছে না, এটি আল্লাহর মহা কুদরত। জমজমের পানির উৎস তিনটি বলে ধারণা করা হয়। ১) কাবাঘরের নিচ থেকে হাজরে আসওয়াদ হয়ে একটি পয়েন্ট। ২) সাফা পাহাড়ের নিচ থেকে একটি পয়েন্ট। ৩) মারওয়া পাহাড়ের নিচ থেকে একটি পয়েন্ট। জমজম কূপের মুখ থেকে নিচে ৪০ হাত পর্যন্ত প্লাস্টার করা। তার নিচে আরও ২৯ হাত কাটা পাথর বিছানো। এসব পাথরের ফাঁক দিয়েই তিনটি প্রবাহ থেকে এ পানি নির্গত হচ্ছে। জমজমের পানি অত্যন্ত পবিত্র। এই পানিতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সল্টের পরিমাণ বেশি, তাই তা শুধু পিপাসাই মেটায় না বরং ক্ষুধাও নিবারণ করে। হজরত আবুজর গিফারি রাজী একবার টানা ৩০ দিন এই পানি পান করে জীবনধারণ করেছিলেন। মহানবী (সা.)-সহ সাহাবাদের স্মৃতিধন্য এই পানির প্রতি সব মুসলমানের অকৃত্রিম আকর্ষণ রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর