শনিবার, ২২ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্লাস্টিক

দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসপত্রে এক দিন ম্যাজিকের মতো পরিবর্তন এনে দিয়েছিল প্লাস্টিক। জিনিসের দাম কমেছিল চট করে। কম দামের জেরে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েছে হু হু করে। কী না হয় প্লাস্টিক দিয়ে। আর এখন ওই প্লাস্টিক গিলে খেতে চাইছে আমাদের। পরিবেশ বিষিয়ে এখন প্লাস্টিক মেরে চলেছে পানি-স্থল-অন্তরীক্ষের প্রাণী। প্লাস্টিক আজ এক যন্ত্রণার নাম। প্লাস্টিক দূষণে সমুদ্রের পানি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সামুদ্রিক প্লাস্টিকের ৮০ শতাংশই আসে স্থলভাগ থেকে। আর বাকি ২০ শতাংশ আসে জাহাজ ও মাছধরা ট্রলার বা লঞ্চ থেকে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বর্জ্য দ্বারা। সারা বিশ্বে অন্তত ২৬৭ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী প্লাস্টিক দূষণের শিকার হয়েছে। সমস্ত সামুদ্রিক কচ্ছপ প্রজাতির ৮৬ শতাংশ কোনো না-কোনোভাবে আক্রান্ত। সামুদ্রিক পাখিদের ৪৪ শতাংশ প্রজাতি এবং সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ৪৩ শতাংশ প্রজাতি প্লাস্টিক দূষণে ধুঁকছে। সামুদ্রিক কচ্ছপদের অন্যতম প্রিয় খাদ্য হলো জেলিফিশ। ওরা জেলিফিশ মনে করে পলিথিন ব্যাগ খেয়ে ফেলছে। তিমি ও সিলেরাও খাচ্ছে। আর এর ফলে তাদের খাদ্যনালিতে প্লাস্টিক জড়িয়ে গিয়ে তারা মারা পড়ছে। পরিবেশবিদদের হিসাব, গড়ে প্রতি বছর চার লাখ সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী মারা পড়ছে প্লাস্টিক দূষণের কারণে। সামুদ্রিক পাখিরা নিজেরা তো খাবার ভেবে প্লাস্টিক খাচ্ছে, তাদের বাচ্চাদেরও প্লাস্টিক খাইয়ে দিচ্ছে। এশিয়া ও উত্তর আমেরিকার মাঝে অবস্থিত হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের উত্তরে বিশালাকার সামুদ্রিক পাখি লেশান অ্যালবাট্রসদের বাস। এরা তাদের বাচ্চাদের ভুল করে খাবার ভেবে প্লাস্টিক খাওয়াচ্ছে। পরীক্ষা করে ৯৮ শতাংশ বাচ্চার পেটে প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, এদের খাদ্যনালিতে লাল, গোলাপি, নীল ও খয়েরি রঙের প্লাস্টিক বেশি রয়েছে।

কিছুদিন আগে করা এক সমীক্ষাতেও জানা যায়, আর এক সামুদ্রিক পাখি সি-গালদের পেটে গড়ে ৩০টি করে প্লাস্টিক উপস্থিত। এর ফলে খাদ্যনালি ও শ্বাসনালি অবরুদ্ধ হয়ে অসংখ্য অ্যালবাট্রস ও সি-গাল মারা পড়ছে।

আফতাব চৌধুরী

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর