রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

কর-সংক্রান্ত মামলা

দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিতে হবে

সরকার পরিচালনা এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বাস্তবায়ন হয় দেশবাসীর দেওয়া করের টাকায়। বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হলেও এ দেশের জনগোষ্ঠীর একটি ক্ষুদ্র অংশই প্রত্যক্ষ কর দেয়। কর দেওয়ার মতো আয় থাকলেও কর দেন না এমন মানুষের সংখ্যা বিপুল। সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখতে সরকারও এ ব্যাপারে পাশ কাটানোর নীতি অনুসরণ করেছে। এ উদারনীতিতে লেজে-গোবরে অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে সরকারের রাজস্ব আদায় কার্যক্রম। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের শর্ত পরিপালন করতে গিয়ে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের চাপের মুখে পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। অন্যদিকে নির্বাচনের বছরে ভ্যাট ও কর আদায়ে মানুষের ভোগান্তি কমিয়ে আনতে এনবিআরকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ বিভাগ। হয়রানি ঠেকাতে কিংবা ভ্যাট ও কর কম দিতে বিভিন্ন সময় মামলা করে আটকে দেওয়া হয়েছে ভ্যাট ও কর আদায় প্রক্রিয়া। গত মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এনবিআরের বিরুদ্ধে ১০ হাজার ১৩৫টি মামলা দায়ের করেছে। এতে ভ্যাট বাবদ আটকা পড়েছে ২১ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। এসব মামলার মধ্যে হাই কোর্ট বিভাগে ৩ হাজার ৩৭৮ মামলায় আটকা পড়েছে ১৪ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। একইভাবে আপিল বিভাগে ২৫৫ মামলায় আটকা রয়েছে ১ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। আপিল ট্রাইব্যুনালে ৩১৯ মামলায় আটকে আছে ৮৬৫ কোটি টাকা। আপিল কমিশনারেটে ১৩ মামলায় ১ কোটি ৭৯ লাখ, ৪ হাজার সার্টিফিকেট মামলায় ২৬৮ কোটি এবং অন্যান্য ২ হাজার ১৭০ মামলায় ৩ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আটকা পড়ে আছে। আমাদের দেশে বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভ্যাট ও কর আদায়ে হয়রানির অভিযোগে একের পর এক মামলা করলেও এর সিংহভাগের উদ্দেশ্য থাকে বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় ভ্যাট ও কর না দেওয়ার কিংবা বিলম্বিত করা। মাসের পর মাস বছরের পর বছর মামলাগুলো অমীমাংসিত অবস্থায় পড়ে থাকায় সরকারকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থার অবসানে রাজস্ব-সংক্রান্ত সব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর