রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

আতঙ্কের নাম ডেঙ্গু

জবাবদিহিতা না থাকায় এ বিপর্যয়

ডেঙ্গু জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এ আতঙ্কের শিকার দেশের ১৭ কোটি মানুষ। যে কোনো ধরনের জ্বর হলেই ডেঙ্গু আতঙ্কে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ হাজির হচ্ছেন চিকিৎসকের কাছে। আগে যারা মৌসুমি জ্বরে আক্রান্ত হলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা স্বপ্নেও ভাবতেন না, এখন তারা শুধু ডাক্তার নয়, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রক্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বিপুল অর্থ ব্যয় করতে বাধ্য হচ্ছেন। গত শুক্রবার পর্যন্ত এক সপ্তাহে ডেঙ্গুর থাবায় মারা গেছেন ৬৩ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৬১২ জন। এ হিসাব হাসপাতালনির্ভর। হাসপাতালের বাইরে আরও বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন এটি অনুমান করা গেলেও তার কোনো হিসাব নেই। দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে শয্যাসংকুলান হচ্ছে না। রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে শয্যার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ভর্তি রয়েছে। মেঝে, বারান্দা থেকে করিডোরে রোগীর ভিড়ে তিলধারণের জায়গা নেই। বেসরকারি হাসপাতালেও শয্যা পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। রোগী বেড়ে যাওয়ায় স্যালাইন, ক্যানোলাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বেড়েছে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই স্যালাইন উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দাম বাড়িয়েছে, সৃষ্টি হয়েছে সরবরাহ সংকট। আগে যে স্যালাইন বিক্রি হতো ৯০ টাকায়, এখন তা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার অনেক জায়গায় স্যালাইন পাওয়াই যাচ্ছে না। আগে ক্যানোলার যে সেটের দাম ছিল ৪০ টাকা তা এখন ১৫০ টাকা। এর সঙ্গে দাম বেড়েছে মাইক্রোপ্রোরও অর্থাৎ ক্যানোলা স্থাপনে ব্যবহৃত বিশেষ টেপের দাম। আগে এক বাক্স মাইক্রোপ্রোর দাম ছিল ৬০০ টাকা, এখন ৮০০ টাকা। সোজা কথায় ডেঙ্গুর থাবা থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে তাদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়ানোর বদলে পকেট কাটার অনৈতিকতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বভাবতই ক্ষোভ বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে। এডিস মশার প্রজননের সঙ্গে বর্ষা মৌসুমের সম্পর্ক রয়েছে। গত তিন দশকের মধ্যে এ বছর সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিন্তু ডেঙ্গুর বিস্তার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে মশা নিধনে গাফিলতির কারণে। সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতা না থাকায় এমন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। যা হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর