ঝালকাঠিতে যাত্রীবাহী বাস পুকুরে পড়ে ১৭ জনের মৃত্যুর পেছনে বাসচালকের গাফিলতিই যে দায়ী, এটি এখন দেশজুড়ে আলোচ্য বিষয়। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সারা দেশে যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে তার সিংহভাগের পেছনে চালকদের বেপরোয়া মনোভাব এবং গাফিলতির বিষয়টি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে পুলিশের তদারকির অভাবকেও অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সদস্যের একাংশের সঙ্গে বাস মালিক ও চালকদের লেনদেনের সম্পর্ক থাকে। ফলে বাসচালকদের দিকে তারা নজর দেন না এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। দুর্ঘটনাকবলিত বাসের বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন বাসচালকের খামখেয়ালিকে। চালকের শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তারা। তাদের অভিযোগ, বাস চালক ও হেলপারের খামখেয়ালির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাস ছাড়ার পর তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে যাত্রী ওঠায়। বাসে বসার জায়গা না থাকায় যাত্রী ওঠাতে নিষেধ করেন যাত্রীরা। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে বচসা শুরু করেন বাসের চালক। চালক পেছনের দিকে তাকিয়ে বচসা করার একপর্যায়ে বাস রাস্তার বাইরে চলে যায় এবং পুকুরে পতিত হয়।
ঝালকাঠিতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জলাশয়ে পড়ে ১৭ জন নিহতের ঘটনার বিষয়টি গোটা জাতিকে ভাবিয়ে তুলেছে। বোদ্ধাজনদের অভিমত, চালকের অবহেলা-অসাবধানতা, অতিরিক্ত যাত্রীবহন, বেপরোয়া গতি, সড়ক-মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যান চলাচল ও সড়কের পাশে হাটবাজার উচ্ছেদ না করায় একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। এজন্য মালিক-শ্রমিকের পাশাপাশি সড়ক বিভাগ, বিআরটিএ ও পুলিশকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। আমরা এই কলামে বারবার লিখেছি, ট্রাফিক আইন মেনে চললে এবং যানবাহন চালকদের ওপর পুলিশের নজরদারি থাকলে দুর্ঘটনা একেবারে বন্ধ না হোক, নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষের অকালমৃত্যু ঠেকানো যাবে। হ্রাস পাবে স্বজনহারাদের কান্না।