বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

অনন্য সুন্দরবন

রহস্যে ঘেরা বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবন

সুন্দরবন দেশের বৃহত্তম বন। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বা বাদাবন এটি। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ফুসফুসের ভূমিকা পালন করছে দৃষ্টিনন্দন এ বন। ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো ও জলোচ্ছ্বাসের সময় এ বাদাবন রক্ষা করে বাংলাদেশের উপকূলীয় ভাগের মানুষকে। সুন্দরবনে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে সাহসী প্রাণী রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামের বাঘ। এ বনের চিত্রল হরিণ দুনিয়ার সুন্দরতম প্রাণী। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বা বাদাবন সুন্দরবন নিয়ে বাঙালির অহংকার আকাশছোঁয়া। সুন্দরবন এলাকা থেকে পাওয়া বিভিন্ন উপকরণে স্পষ্ট হয়েছে খ্রিস্টাব্দের শুরুর দিকে মৌর্য যুগেও এ এলাকায় জনবসতি ছিল। ৫০০ থেকে ৬০০ বছর পর্যন্ত টিকে ছিল সেই সভ্যতা। সুন্দরবন সম্পর্কে ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্তের অভাব থাকায় এ এলাকায় জনবসতি গড়ে তোলার জন্য ব্রিটিশদেরই কৃতিত্ব দেওয়া হতো। ১৭৫৭ সালে মুঘল বাদশাহ দ্বিতীয় আলমগীরের কাছ থেকে সুন্দরবনের মালিকানা পায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এরপর ১৭৬৪ সালে এ বাদাবনের প্রথম মানচিত্র তৈরি করে তারা। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় নিশ্চিত হওয়া গেছে, এর বহু আগে থেকেই সুন্দরবনে মানুষের বসবাস ছিল। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, খননকৃত এলাকা থেকে মানুষ ও জীবজন্তুর যেসব টেরাকোটা মূর্তি উদ্ধার হয়েছে, তা খ্রিস্টাব্দ শুরুর সমসাময়িক, এমনকি তারও আগের। সিলমোহরের চিহ্ন আঁকা যেসব টেরাকোটার টুকরা পাওয়া গেছে, তা প্রাগৈতিহাসিক যুগের বলেও সাক্ষ্য দেয়। এক জেলে নানা সময় মাছ ধরতে গিয়ে টেরাকোটার খেলনা, প্রাচীন পুঁতির মালা, লকেটের মতো বেশ কিছু জিনিস খুঁজে পান। এসবের সঠিক অর্থ বুঝতে না পারলেও তিনি এগুলো নষ্ট করে না ফেলে নিজের সংগ্রহে রেখে দেন। এভাবে ২২ বছরে প্রায় ১৫ হাজার প্রাচীন নিদর্শন সংগ্রহ করেন তিনি। এই জেলেই বিষয়টি ২০১৬ সালে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে জানান। সুন্দরবনে ইংরেজ শাসনামলের আগেই যে জনবসতি গড়ে উঠেছিল রাজা প্রতাপাদিত্যের বিভিন্ন স্থাপনা তারই প্রমাণ। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সুন্দরবন এলাকায় তিনি স্থাপন করেছিলেন তাঁর রাজধানী। ভারতের সুন্দরবন অংশ থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বাংলাদেশ অংশেও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার তাগিদ সৃষ্টি করেছে। দেশের ইতিহাসের স্বার্থে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসবেন- এমনটিই কাঙ্ক্ষিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর