বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

অপরূপ ভেনিস

অপরূপ ভেনিস

নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের দেশ ইতালি। এ দেশের এক দৃষ্টিনন্দন শহর ভেনিস। যাকে বলা হয় রূপকথার শহর। ভূমধ্যসাগরের বুকে গড়ে ওঠা এই সুন্দর শহরের আয়তন ৪১৪.৫৭ বর্গ কিলোমিটার। ১১৮টি দ্বীপের এ শহরে রয়েছে ১৭৭টি খাল। প্রতিটি দ্বীপ একে অন্যের সঙ্গে সেতু দিয়ে সংযুক্ত। প্রতিটি দ্বীপের সংযুক্তির জন্য রয়েছে ৪০৯টি সেতু। অপরূপ এ শহরে হাঁটার পথ নেই। পানির মধ্যে গেঁথে থাকা সব বাড়িঘর। এমন রূপে সজ্জিত এ শহরকে ‘ভাসমান শহর’ও বলা হয়। ইউরোপের একমাত্র মোটরগাড়িহীন এবং একবিংশ শতাব্দীতেও গাড়ির ধোঁয়াহীন শহর ভেনিস। নান্দনিক কারুকার্যে খচিত জলযানই এ ভাসমান শহরের একমাত্র যানবাহন। দেড় হাজার বছর আগে আত্তিলা নামক এক দস্যু বাস করত অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের উপকূলে। তার দস্যুবৃত্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উপকূলবর্তী জনগণ এই অসংখ্য দ্বীপে ঘেরা জলাভূমিতে এসে ঘরবাড়ি তৈরি করে; যাতে আত্তিলা ঘোড়ায় চড়ে এ এলাকায় প্রবেশ করে দস্যুবৃত্তি করতে না পারে। সেই দ্বীপপূর্ণ জলাভূমি থেকেই ভেনিসের যাত্রা।

মোহনীয় ও রোমান্টিক নগরী হিসেবে সব পর্যটকের পর্যটন তালিকার শীর্ষে রয়েছে সিটি অব লাভ অ্যান্ড লাইটস খ্যাত ভেনিস। ভেনিস বছরের ৩৬৫ দিনই পর্যটকের ভিড়ে লোকারণ্য থাকে। প্রতিদিন ভেনিসে অবস্থানরত লাখো মানুষের মধ্যে শতকরা ৭৫ ভাগই থাকে দর্শনার্থী।

ভেনিসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের লক্ষ্যে পৃথিবীর একেক প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীর জন্য রয়েছে ভেনিসের ঐতিহ্যবাহী নানান স্থাপনা, জাদুঘর, ক্যাফে, রেস্টুরেন্ট। এসব স্থাপনায় মন ছুঁয়ে যায় আগত দর্শনার্থীদের। মাকড়সার জালের মতো ভেনিসজুড়ে চলে গেছে একেকটা সরু খাল। এরই মাঝে শহরকে দ্বিখন্ডিত করা সেই বিখ্যাত খাল গ্র্যান্ড ক্যানেল। স্থাপনা জগতের এক বিস্ময়। নৌকা, স্পিডবোটের যাতায়াতের পথের এসব খাল থেকে দেখা যায় শহরের চোখ জুড়ানো রং, নকশা, স্থাপত্যশৈলী। খালের ওপর নয়নাভিরাম সব সেতু।

ভেনিস নগরীর এক গুরুত্বপূর্ণ, আকর্ষণীয় স্থান পিয়াজ্জা সান মার্কোতে অবস্থিত ভৌজ প্যালেস। ভেনিসের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির এক অন্যতম চর্চা কেন্দ্র। প্রাচীন স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত এ ভবনকে ১৯২৩ সালে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়।

বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল শহর ভেনিস। প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রেস্টুরেন্টের সঙ্গেও নতুন নতুন অনেক ক্যাফে-রেস্তোরাঁ রয়েছে এই ভাসমান নগরীতে। ভেনিসের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী একটি রেস্টুরেন্ট ট্রেট্টোরিয়া ডি ফার্নি। এ রেস্টুরেন্টটি একসময় বেকারি ছিল। ১৯৭৩ সালে একে রেস্টুরেন্টে রূপান্তরিত করা হয়। ভেনিসের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন সব খাবার, সব রকমের সামুদ্রিক খাবার এখানে পাওয়া যায়। সামুদ্রিক খাবারের মধ্যে শামুক, ঝিনুক থেকে শুরু করে অক্টোপাস, স্কুইড সব ধরনের সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায়।

মুখোশের শহর নামেও পরিচিত ভেনিস। প্রতি বছর ভেনিসে কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হয়। এ কার্নিভাল উপলক্ষে অসাধারণ কারুকার্য খচিত, শৈল্পিক রুচির সমন্বয়ে তৈরি হয় সব মুখোশ। ভেনিসের রংবেরঙের মুখোশগুলো জগদ্বিখ্যাত।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর