টোডা জনগোষ্ঠীর বসবাস ভারতের নীলগিরি পর্বতে। এরা স্বনির্ভর এক উপজাতি জনগোষ্ঠী। এদের উৎপত্তি বা বিকাশ সম্পর্কে সঠিক কোনো ইতিহাস নেই। টোডাদের একমাত্র পেশা পশুপালন ও দুধ উৎপাদন। ১৯০১ সালে এদের মোট জনসংখ্যা ছিল ৮০৭। গত ১০০ বছরে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ১ হাজার ৭০০-এ। এর মধ্যে ৬০ ভাগের বেশি পুরুষ আর ৪০ ভাগের কম নারী। আর এ কারণেই টোডা সমাজের মেয়েরা বহুবিবাহে অভ্যস্ত। তাদের বহুবিবাহ প্রথা অনুসারে মেয়েরা যে কোনো পরিবারের একাধিক ছেলেকে বিয়ে করতে পারে অর্থাৎ কোনো পরিবারে যদি পাঁচ ভাই থাকে তাহলে ওই পাঁচ ভাইকে যে কোনো একটি মেয়ে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। হিন্দু পুরাণের পঞ্চপা-ব আর দ্রৌপদীর কাহিনির সঙ্গে মিল থাকলেও টোডারা হিন্দুধর্মে বিশ্বাস করে না। এ জনগোষ্ঠীর উৎপত্তি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও এরা দীর্ঘ অতীত থেকে নীলগিরি পর্বতে বসবাস করে এসেছে। এরা কথা বলে দ্রাবিড়িয়ান টোডা ভাষায়, যা একান্তই ওদের নিজস্ব এবং এর কোনো লিখিত রূপ নেই। টোডা উপজাতির ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এরা গৃহপালিত মহিষের পূজা করে। এ ছাড়া এদের দেবদেবীর জন্য আছে সর্বদেবতা মন্দিরও। টোডারা মনে করে তাদের সৃষ্টিকর্তা প্রথমেই সৃষ্টি করেছেন পবিত্র মহিষ এবং তার পরই সৃষ্টি করেছেন তাদের প্রথম পুরুষকে। আর প্রথম নারী সৃষ্টি হয়েছে প্রথম পুুরুষের ডান পাঁজরের হাড় থেকে। এদের ধর্মে নদীর পুল বা সাঁকো কিংবা ব্রিজ পার হওয়া নিষিদ্ধ। নদী পার হতে হলে সাঁতার দিয়েই পার হতে হয়।
♦ সুদীপ্ত সুজন