শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ড. তাহের হত্যাকাণ্ড

ফাঁসিতে ঝুলতে হলো দুই খুনিকে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলার দুই আসামি ড. মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি বৃহস্পতিবার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর হয়েছে। শিক্ষক নামের কলঙ্ক ড. মিয়া মহিউদ্দিন অধ্যাপক পদে নিজের পদোন্নতির পথে ড. তাহেরকে পথের কাঁটা ভেবে তাকে নৃশংসভাবে হত্যার নীলনকশা আঁটেন ও হত্যাকাণ্ড ঘটান। অধ্যাপক ড. তাহেরের অপরাধ তিনি ড. মিয়া মহিউদ্দিনের অধ্যাপক পদে পদোন্নতির কাগজপত্রে প্রতারণার বিষয়টি ধরে ফেলেন। পদোন্নতির রিভিউ কমিটির সদস্য হিসেবে তার পদোন্নতির বিরোধিতা করেন। এর ফলে সরাসরি হত্যার হুমকি দেওয়া হয় অধ্যাপক ড. তাহেরকে। তিনি এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে চলেছে এ মামলা। এ মামলায় আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মহিউদ্দিন অনুমান করেছিলেন অধ্যাপক তাহের জীবিত থাকলে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার আশা একেবারেই শূন্য। এ কারণে পদোন্নতির পথ পরিষ্কার করতেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা হয়। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে জাহাঙ্গীর বলেন, মহিউদ্দিন স্যার কম্পিউটার ও চাকরির লোভ দেখিয়েছিলেন বলেই আমি ড. তাহের স্যারকে হত্যা করেছি। ড. মিয়া মহিউদ্দিন ১ ফেব্রুয়ারি রাতে জাহাঙ্গীরের হাতে একটি রিভলবার দিয়ে আগেই ড. তাহেরের বাসায় পাঠিয়ে দেন। রাত ৯টার দিকে ড. মহিউদ্দিন, সালাম ও নাজমুল ওই বাসায় যান। এ সময় চলছিল লোডশেডিং। কথা বলার এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর রিভলবারের বাঁট দিয়ে ড. তাহেরের ঘাড়ে আঘাত করেন। এতে অচেতন হয়ে পড়লে তাকে ধরাধরি করে নিচে নামানো হয়। জাহাঙ্গীরের শোবার ঘরে ড. তাহেরকে নিয়ে মুখে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর বাড়ির পেছনের সেপটিক ট্যাংকে লাশ ফেলে রাখা হয়। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে শিবির কানেকশন সারা দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। খুনি জাহাঙ্গীরের ভাই সালাম ছিলেন শিবির কর্মী। ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারির হত্যাকাণ্ডের দুই আসামির ফাঁসির ঘটনা ড. তাহেরের স্বজনদের কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দেবে। এ শাস্তি সব অপরাধীর মনে ভয় ঢোকাবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর