শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

কবে সত্যের জয় হবে?

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

কবে সত্যের জয় হবে?

জুন-জুলাই এ দুই মাসই ছিল নির্বাচনী তৎপরতায় ভরা। বাসাইল পৌর নির্বাচন হয়েছে ২১ জুন। সেখানে গামছার প্রার্থী রাহাত হাসান টিপু জয়ী হয়েছে। টিপুর জয়ের চেয়েও বড় কথা হলো মানুষ ভোট দিতে পেরে দারুণ খুশি। সত্যিই চমৎকার নির্বাচন হয়েছে। একেবারে উৎসবের মতো ভোটারের আনাগোনা ও পছন্দনীয় প্রার্থীকে ভোটার ভোট দিয়েছে। ১৭ জুলাই ছিল সখিপুরের চারটি এবং কালিহাতীর দুটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। দুই জায়গাতেই মাননীয় সংসদ সদস্যরা খুবই বাড়াবাড়ি করেছেন। কিন্তু প্রশাসনিক সাহায্য পাননি। আগে আমরা নির্বাচন করতাম, দারোগা-পুলিশ নিয়ে ভাবতে হতো না। এখন প্রার্থীরা কেন্দ্রের খরচ, পোলিং এজেন্টদের খাওয়াদাওয়ার চিন্তার চেয়ে পুলিশ-প্রিসাইডিং অফিসার-নির্বাচন অফিসারদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এ কয়েকটি নির্বাচনের আগে খরচাপাতি দিয়ে সরকারি দলের লোকজন যথেষ্ট লাভবান হয়েছে। কিন্তু ১৭ জুলাই এবং ২১ জুনের ভোটে তেমন কিছু হয়নি। তবে দু-তিনটি ইউনিয়ন পরিষদে কিছু অভিযোগ থাকলেও সবাইকে তাড়িয়ে দিয়ে সিল মারার মতো অবস্থা কোনো কেন্দ্রেই হয়নি। যার কৃতিত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকেই দাবি করতে পারেন। তবে জাতীয় নির্বাচন আর স্থানীয় নির্বাচন এক কথা নয়। শত শত সুন্দর স্থানীয় নির্বাচন হলেও একটা জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা চলে না। তবে এটা ঠিক, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সবাই দায়িত্বশীল, বিবেকবান হলে, চুরি করে ভোটে জেতার মানসিকতা ত্যাগ করতে পারলে এসব বন্ধ অসম্ভব নয়। কালিহাতীর বীর বাসিন্দা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হয়েছে প্রাক্তন চেয়ারম্যান মো. ছোহরাব আলী। এখানে এমপির প্রার্থী ছিল দুজন। একজন নৌকা মার্কার মো. আবদুল খালেক, আরেকজন আনারস মার্কার মো. সেলিম সিকদার। বীর বাসিন্দার জোয়াইর কেন্দ্রে নৌকা মার্কা পেয়েছে ১ হাজার ৭১৮ আর বিজয়ী প্রার্থী মোটরসাইকেল পেয়েছে ৫৭ ভোট। আটাবাড়ি কেন্দ্রে প্রায় একই রকম। তবু চুরি করা প্রার্থী জিততে পারেনি। সখিপুরেও তেমন হয়েছে। কিন্তু মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা না করে নৌকা মার্কা থেকে আত্মীয়স্বজনকে মনোনয়ন দেওয়ায় তারা কেউ জিততে পারেনি। এলাকার মানুষ ভোট দিতে পেরে মহাখুশি। আমারও চাহিদা ছিল স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারুক। সেটা তারা পেরেছে। তাই আমারও বেশ ভালো লেগেছে। বহুদিন পর সাধারণ ভোটার খুবই আনন্দে ভোট দিয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনে ভোট পড়েছে শতকরা ৭০-৮০ শতাংশ। সেই একই দিনে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ১১ কিংবা সাড়ে ১১ শতাংশ। অথচ সরকারি দল আওয়ামী লীগের ৪৩-৪৪ শতাংশ ভোট আছে। তাহলে এতে কী বোঝায়? নিজের দলের লোকেরাও কেন্দ্রে যায়নি। ভোট নিয়ে একটা উদাসীনতা। এটা তো অবশ্য অবশ্যই দূর করতে হবে। তা না হলে যত যা-ই করা হোক দেশের মালিকানা যতক্ষণ সাধারণ মানুষের হাতে না আসবে, ততক্ষণ সাধারণ ভোটাররা ভোটে অংশ নেবে না। উৎসাহহীন মানুষ কোনো কাজে আসতে পারে না। উৎসাহহীনদের নিয়ে কোনো কাজ কখনো করা যায় না। এটা যদি সব ক্ষেত্রে সবার জন্য হতো তাহলে দেশে এত অস্থিরতা থাকত না। সাধারণ মানুষ মনে করত দেশের মালিক তারা। কিন্তু এখন সাধারণ মানুষ তেমনটা মনে করতে পারে না। সাধারণ মানুষের প্রশাসনের কাছে একেবারেই মূল্য নেই। অথচ সাধারণ মানুষের মূল্য হওয়া উচিত ছিল রাজা-বাদশাহদের মতো। তা যদি হতো তাহলে দেশের জন্য সাধারণ মানুষের মায়ামমতা-দায়িত্ববোধ বাড়ত, দেশকে মায়ের মতো সম্মান করত, ভালোবাসত, দেশের যে কোনো প্রয়োজনে লাখো কোটি মানুষ এগিয়ে আসত। সেটা এখন নেই। আর ইদানীং অর্থবিত্তের ওপর মানুষকে অনেকটাই বিচার করা হয়। সেহেতু সাধারণ মানুষ একেবারে অসহায়, দিশাহারা। ছোটবেলার অনেক কথা মনে পড়ে। গ্রামে দেখেছি, কোথাও ঝগড়াঝাঁটি শুরু হলে হয়তো এক পর্যায়ে কেউ ছুটে এসে পাকিস্তানের দোহাই দিত। চিৎকার করে কেউ হয়তো বলত, আমি পাকিস্তানের দোহাই দিলাম আপনারা ঝগড়াঝাঁটি বন্ধ করুন। মারাত্মক ঝগড়াও তখন থেমে যেত। কেউ পাকিস্তানের দোহাই দিলে, পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে দিলে সব ঝগড়াঝাঁটি নিমেষেই শান্ত হয়ে যেত। কিন্তু এক সাগর রক্তের বিনিময়ে যে দেশ আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি, অর্জন করেছি দু-চার শ বার সেই বাংলাদেশের দোহাই দিলেও কোনো কাজ হয় না। বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে শান্তি কামনা করলেও শান্তি আসে না। বড় কষ্ট হয় দেশের এ ধরনের অবমূল্যায়ন দেখে। একজন মানুষের একটি সমাজের থেকে বড় কিছু হতে পারে না। কিন্তু কেমন যেন এখন অনেকেই দেশকে তেমন গুরুত্ব দেয় না, দেশের স্বাধীনতাকেও তেমন দেয় না। যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের স্বাধীনতার পর জন্ম। আমরা যদি ঠিকভাবে দেশের ইতিহাসে যার যতটা ভূমিকা ততটা দিতাম বা দিতে পারতাম তাহলে এ নাজুক অবস্থা হতো না। আমরা কেন যেন অন্যকে সম্মান করা বা নির্ভয়ে সত্য উচ্চারণ করার সৎসাহস হারিয়ে ফেলেছি। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের চাবিকাঠি ছিল সততা, দেশপ্রেম। আমাদের নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ চলাকালে আমাদের সঙ্গে ছিলেন না। ছিলেন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। নেতা সঙ্গে থাকার চেয়ে কারাগারে বন্দি থাকার বেদনা আমাদের আরও শক্তিশালী, গতিময় করেছিল। যুদ্ধের সময় মুজিবনগর বিপ্লবী সরকার যদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নিজে উপস্থিত থেকে পরিচালনা করতেন তাহলে খুব বেশি ভালো হতো আমার তেমন মনে হয় না। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তান সরকার এবং সম্পদশালী সমাজ রাতদিন ভারতবিরোধী প্রপাগান্ডা করে আমাদের ভারতবিদ্বেষী করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। সেসব চেষ্টায় যে তারা একেবারে সফল হয়নি তা নয়। এতে তারা অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি না হয়ে ভারতে গিয়ে বিপ্লবী সরকার গঠন করলে অতটা ফল পাওয়া যেত না যতটা তার অবর্তমানে পাওয়া গেছে। জন্মের পর থেকেই আমরা ভারতবিদ্বেষ শুনে এসেছি। ভারত কোনোমতেই পাকিস্তানকে টিকতে দেবে না, পাকিস্তান দখল করে নেবে অথবা পাকিস্তান যাতে কোনোভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে এটা ভারতের ষড়যন্ত্র- এমন প্রপাগান্ডা খুব সুচতুরভাবেই চালানো হতো যাতে মানুষ গ্রহণ করে। মানুষ কিছু যে গ্রহণ করেনি তা নয়। কিছুটা স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষ গ্রহণ করেছিল। বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কামারুজ্জামানসহ আরও আরও নেতা মুজিবনগর সরকার গঠন করে নেতৃত্ব দেওয়ায় আমরা যেমন শক্তি পেয়েছি, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে- যুদ্ধ জয় ছাড়া তাঁকে আমরা কোনো দিন ফিরে পাব না এই পরম সত্য আমাদের পাকিস্তানি হানাদারদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে আরও বেশি বেগবান, তেজোদীপ্ত করেছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ২৫ মার্চ রাতে যদি গ্রেফতার না হতেন তাহলে শুধু ঢাকাতেই আরও লাখ লাখ মানুষ নিহত হতো। যতক্ষণ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করতে না পারত ততক্ষণ হত্যালীলা চালিয়েই যেত। তাই বঙ্গবন্ধু পালিয়ে গেলেন না কেন, কেন ধরা পড়লেন এসব যারা এখন আলোচনা করে তারা সে সময়, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান হানাদারদের নিদারুণ নির্মম অত্যাচারের কথা কল্পনায়ও আনতে পারে না। কল্পনারও একটা সীমা আছে। মানুষ সেই সীমার বাইরে অনেক কিছুই কল্পনা করতে পারে না। পাকিস্তান হানাদারদের অত্যাচার সচক্ষে দেখেছি। রাস্তায় রাস্তায় হত্যা করে মানুষ ফেলে রাখতে দেখেছি। গ্রামকে গ্রাম জ্বালিয়ে দিতে দেখেছি। এখন আমার কাছেও ভাবতে কষ্ট হয় পাকিস্তানিরা এসব কীভাবে করেছে? বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকলে বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এ এইচ এম কামারুজ্জামান, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, জননেতা আবদুল মান্নান আরও যাঁরা ভারতে গিয়ে মুজিবনগর সরকার গঠন করেছিলেন তাঁদের সুষ্ঠু নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম। পাকিস্তান সব সময়ই আমাদের ভারতের দালাল বলত। কিন্তু আমরা কখনো ভারতের দালাল ছিলাম না। আমরা দেশমাতৃকার সন্তান ছিলাম। বিপ্লবী মুজিবনগর সরকারকে শতবার দালাল বলা হয়েছে, আমাদের বলা হয়েছে। যদিও এ প্রপাগান্ডায় কোনো কাজ হয়নি। কিন্তু সত্যিই যদি বঙ্গবন্ধু ভারতে বসে মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্ব দিতেন তাহলে কোনোমতেই আমরা দেশ স্বাধীন করতে পারতাম না। দেশের অসংখ্য মানুষ তখন পাকিস্তানের কথা বিশ্বাস করত এবং আমাদের সবাইকে ভারতের দালাল হিসেবে চিহ্নিত করতে সুবিধা হতো। তাতে আমরা দেশবাসীর অতটা সমর্থন পেতাম না। আর নিখাদ সমর্থন না পেলে স্বাধীনতা হতো সুদূরপরাহত। আমরা মুক্তিযুদ্ধে যা কিছু করেছি সবকিছু এককথায় বলা চলে আল্লাহর তরফ থেকে পেয়েছি। তাই আমরা অত সহজে জয়লাভ করেছি। পাকিস্তানের ইমরান খান একজন নামকরা ক্রিকেট খেলোয়াড়। তিনি পাকিস্তানকে অনেক সম্মানের ভাগিদার করেছেন। আগে মনে করতাম হঠাৎই রাজনীতিতে এসে তিনি রাজনীতিকে খেলার মতো মনে করেছেন। কিন্তু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার পর দেশের মানুষের কাছে একজন প্রকৃত জাতীয় নেতার আসনে আসীন হয়েছেন। আমার তো মনে হয় পাকিস্তানে এই সময় ইমরান খানের চেয়ে জনপ্রিয় নেতা দ্বিতীয় কেউ নেই। ভারতের স্বাধীনতার সময় মহাত্মা গান্ধী, আমাদের স্বাধীনতার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও পৃথিবীর আরও অনেক অনেক নেতার কাছাকাছি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। একদিকে সমস্ত প্রশাসন, সেনাবাহিনী অন্যদিকে ইমরান খান আর পাকিস্তানের বীর জনতার কঠিন লড়াই। জনতাকে যদি দেশের মালিক ভাবতে হয় তাহলে পাকিস্তানে ইমরান খানের কোনো বিকল্প নেই। যারা ইমরান খানকে হত্যা করতে, খুন করতে চায় তারা কোনোমতেই সফল হবে না। ইমরান খান নিহত হলে শত শত হাজার বছরের জন্য মানুষের হৃদয়ে পাকাপোক্ত জায়গা করে নেবেন। ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫-এ ঘাতকের বুলেটে বঙ্গবন্ধু নিহত হয়েছেন। অমনটা না হয়ে তিনি যদি পাকিস্তানের কারাগারেই দুশমনের হাতে নিহত হতেন তাহলে পৃথিবীর সব জনপ্রিয় নেতার চেয়ে বঙ্গবন্ধু থাকতেন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, সবচেয়ে আকাক্সিক্ষত নেতা। তিনি সাড়ে তিন বছর বেঁচে ছিলেন, দেশ পরিচালনা করেছেন সেজন্য আজ এত কথা। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা চিন্তাও করা যায় না। অথচ ইদানীং কিছু নাবুঝ এমন ভাব করে যেন তারাই দেশ স্বাধীন করেছে, আমরা কেউ কিছু না। এরকম মনোভাব মোটেই ভালো না। বঙ্গবন্ধুর দলের লোকজনও তাঁকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারছে না বা তুলে ধরতে চায় না। আস্তে আস্তে গ্রামগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর প্রতি নিদারুণ বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। এ মনোভাব কবে কীভাবে যে দূর করা যাবে ভেবে পাই না। নির্মোহভাবে কেউ কিছু ভাবতে চায় না বা বিচার করে না। অথচ আমরা নির্মোহ বিচারবোধ সম্পন্ন একটা জাতি গঠন করতে পারলে বিশ্বের দরবারে আমাদের স্থান হতো অনেক ওপরে।

এই কিছুদিন রাজনীতির যে দাবাখেলা চলছে সেখানে আশার তেমন কিছু চোখে পড়ে না। বিএনপি অনেক কথা বলে। যেসব কথার সঙ্গে সাধারণ মানুষ জড়িত নয়। আর সাধারণ মানুষ যতক্ষণ রাজনৈতিক দলকে সমর্থন না দেবে ততক্ষণ সাফল্যের চিন্তা একেবারে বাতুলতা মাত্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও করে একসময় জাসদের প্রাণপুরুষ যুবসমাজের হৃৎস্পন্দন আ স ম আবদুর রব গুলিবিদ্ধ হলে পিজি হাসপাতালে নিয়ে এলে তাঁর সুচিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু অস্থির হয়ে উঠেছিলেন। মনে হয় ঠিক তেমনি সেদিন মিছিল থেকে গয়শ্বর চন্দ্র রায়কে তুলে নিয়ে ডিবির অফিসে বসিয়ে যেসব খাদ্যসামগ্রী দিয়ে তাঁকে আপ্যায়ন করা হয়েছে এই ধাক্কা কুলিয়ে উঠতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বহুদিন লাগবে। তিনি কী খান, কী খান না এটা বড় কথা নয়। কিন্তু ডিবিপ্রধান হারুনের দফতরে টেবিলে সাজানো থরে থরে খাবারের ছবি যা দেশবাসী দেখেছে তার প্রভাব মুছতে বা ভুলিয়ে দিতে অনেক সময় লাগবে। আরেকজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান। তিনিও খুব সহজে পার পাবেন না। আমরা রাতদিন শুনি অনেক নেতার সরকারের সঙ্গে লাইন আছে। কথাটা একেবারে অসত্য নয়। আমান উল্লাহ আমানও সে ধরনের লাইনের মধ্যে পড়েন। আমাকে নিয়েও অনেক কথা হতে পারে। কবে যেন কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রম এবং জেনারেল ইবরাহিম বীরপ্রতীক বলেছেন, ‘কাদের সিদ্দিকীকে আমরা চাইলে কী হবে, যার জন্ম আওয়ামী লীগে। এত উথালপাথালের পরও যার নেতা বঙ্গবন্ধু। তিনি যেখানেই যান যেভাবেই থাকেন বঙ্গবন্ধুকে ছাড়বেন না। বঙ্গবন্ধু তাঁর নেতা। সেটা আজীবন ধরে রাখবেন।’ কথাটা মিথ্যা নয়। আমার সমস্ত হৃদয়জুড়ে আছেন বঙ্গবন্ধু। ভাই লতিফ সিদ্দিকীর জন্য রাজনীতিতে এসেছিলাম। তাঁর জন্যই বঙ্গবন্ধুকে পেয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুকে পেয়ে দেশপ্রেম কী তা বুঝতে পেরেছিলাম। যে প্রেম ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না, দেখা যায় না, শুধু সমস্ত অন্তরাত্মা দিয়ে অনুভব করা যায় সেই দেশমাতৃকাকে ভালোবাসতে শিখে আমার জীবন ধন্য হয়েছে।

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর