বুধবার, ২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঋণ প্রবাহে ভাটা

তারল্য সংকট উত্তরণে ব্যবস্থা নিন

বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কমেছে জুন মাসে। জাতীয় নির্বাচনের ছয় মাস আগে ঋণের প্রবৃদ্ধি হোঁচট খাওয়ার পেছনে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট যে অনেকাংশে দায়ী তা সহজেই অনুমেয়। দেশের ব্যাংকগুলো ব্যবসার স্বার্থে ঋণদানের জন্য মুখিয়ে থাকে। ব্যবসায়ী বা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি করা তো অনেকটা সহজাত নেশার মতো। আর সরকারও চায় বিনিয়োগের পাখা দিন দিন বিস্তৃত হোক। কারণ বিনিয়োগ মানেই হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান। বিনিয়োগ মানেই সমৃদ্ধি। দেশের অর্থনীতি দিন দিন স্ফীত হওয়া। এত কিছু ইতিবাচক সম্ভাবনা সত্ত্বেও কঠিন বাস্তবতা হলো বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৮ মাসের মধ্যে গত জুনে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি সংকট, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাসহ বহুমুখী চ্যালেঞ্জে ঋণ বিতরণ কমে গেছে এমন ধারণা বোদ্ধামহলের। তাদের আশঙ্কা আগামীতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থানে। ব্যাংকাররা মনে করছেন, বিনিয়োগের জন্য গ্যাস-বিদ্যুতের চ্যালেঞ্জের সঙ্গে রাজনৈতিক স্থিতাবস্থার বিষয়টিও গুরুত্ববহ। দেশে যে কোনো মূল্যে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখা জরুরি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি মে মাসে ১১ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমে জুনে ১০ দশমিক ৫৭ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০২১ সালের নভেম্বরের পর জুনে ঋণের প্রবৃদ্ধি সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ১১ শতাংশ ছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ব্যাংকারদের বিশ্লেষণ, দেশের ব্যাংকিং খাতে তারল্য ঘাটতির কারণে জুনে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি কমেছে। বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ হ্রাসের পেছনে নির্বাচনী বছরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দানা বেঁধে ওঠা অনিশ্চয়তার পাশাপাশি তারল্যের সংকটও দায়ী। আমানতের সুদহার কম থাকায় অনেকে ব্যাংকে টাকা রাখাকে অলাভজনক মনে করছে। সংকট উত্তরণে ব্যাংকগুলোর আমানতবান্ধব ভূমিকার বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর