বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

তেল-গ্যাস অনুসন্ধান

সমুদ্র প্রান্তের ওপর শেষ ভরসা

বিশ্ববাজারে তেল গ্যাস কয়লার দাম বৃদ্ধিতে যেসব দেশ নাজুক অবস্থায় পড়েছে বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। জ্বালানির ক্ষেত্রে বহুলাংশেই আমদানিনির্ভর হওয়ায় আমদানিকারক সব দেশকে এক-দেড় বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণ-তিন গুণ দামে জ্বালানি কিনতে হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে উজাড় হয়ে যাচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ। দেশের স্থলভাগে গ্যাসের মজুদ শেষ হওয়ার পক্ষে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকারের আশু কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধান। কিন্তু দেশের স্থলভাগে বড় ধরনের কোনো তেল ক্ষেত্র আবিষ্কারের সম্ভাবনা কম। এ প্রেক্ষাপটে ভরসা রাখতে হচ্ছে সাগর প্রান্তের ওপর। বাংলাদেশের সাগর সীমায় তেল-গ্যাসের ভালো মজুদ আছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। কিন্তু তেল-গ্যাস উত্তোলন এবং বণ্টন সম্পর্কে মতপার্থক্য থাকায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এ বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। যে কারণে নতুন উৎপাদন ও অংশীদারি চুক্তির দিকে এগোচ্ছে সরকার। এতে বিদেশি কোম্পানি প্রাপ্ত তেল-গ্যাসের ৫০ শতাংশ পাবে। আর বাংলাদেশ না কিনলে থাকবে রপ্তানির বিধানও। সরকারের জ্বালানি বিভাগ জাতীয় নির্বাচনের আগে এক্সন মবিলের সঙ্গে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়টি চূড়ান্ত করার পথে হাঁটছে। সরকার এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের এই কোম্পানির প্রস্তাবটিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে। গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়ে দুই দফায় প্রস্তাব পাঠিয়েছে এক্সন মবিল। প্রথম দফায় চলতি বছর মার্চে পেট্রোবাংলার কাছে প্রস্তাব পাঠায় কোম্পানিটি। সরকারের উচ্চপর্যায়ে এটি নিয়ে আলোচনা হয় এবং এ নিয়ে সামনে অগ্রসর হওয়ার জন্য নীতিগত সম্মতি পাওয়া যায়। জুলাই মাসে এক্সন মবিল জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে সর্বশেষ প্রস্তাব পাঠায়। তারা গভীর সমুদ্রের ব্লকগুলোর বাইরেও কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। এক্সন মবিল কর্তৃপক্ষ জানায় যে যদি এই অনুসন্ধান সফল হয় তাহলে বছরে বাংলাদেশের তিন বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে, যা বর্তমানে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানিতে ব্যয় হচ্ছে। আমরা আশা করব জ্বালানি সংকট মোচনের স্বার্থে সরকার দেশের স্বার্থ রক্ষা সাপেক্ষে দ্রুত এ চুক্তিতে আবদ্ধ হবে। পাশাপাশি তেল-গ্যাস উত্তোলনে নিজেদের সক্ষমতা গড়ে তোলার দিকে নজর দেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর