বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিচিত্রতা

কীর্তনখোলা নদী

কীর্তনখোলা নদী বরিশালের শায়েস্তাবাদ থেকে যাত্রা করে গাবখান খালের কাছে এসে গজালিয়া নদীতে পড়েছে। প্রাচীন এই নদীটি বর্তমানে বরিশাল নদী নামে পরিচিত। দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬০ কিমি।

অতি প্রাচীনকালে গঙ্গার তিন প্রবাহের (নলিনী, হলদিনী ও পাবনী) অন্যতম পাবনী। এটি প্রাচীন পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়ে (মিলিত ধারা সুগন্ধা) আন্দার খাল বা আড়িয়াল খাঁ নামে ফরিদপুরের দক্ষিণে মাদারীপুর হয়ে কয়েকটি শাখায় বরিশালের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। পথে বিভিন্ন স্থানে নানা পরিচিতি নিয়ে হরিণঘাটা নামে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। ওই আন্দার খাল বা আড়িয়াল খাঁ নদ মাদারীপুরের দক্ষিণে সুগন্ধা নামে পরিচিত ছিল এবং একসময় বাকলা চন্দ্রদ্বীপ বা বর্তমান দক্ষিণ বাংলার সর্ববৃহৎ নদী ছিল। কালের আবর্তে প্রবাহের পরিবর্তন হয়ে সুগন্ধার বদ্বীপের শাখা নদীগুলো ক্ষীণ হয়ে ভরে যায় এবং ধীরে ধীরে বৃহত্তর বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় চর সৃষ্টি করে এবং কালক্রমে সুগন্ধা নাম বিলীন হয়ে আড়িয়াল খাঁ নামটি প্রাধান্য পায়। এ আড়িয়াল খাঁর একটি শাখা শায়েস্তাবাদের কাছে পুবদিকে প্রবাহিত হয়ে ভোলার শাহবাজপুরে মেঘনার সঙ্গে মিলিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। অন্য এক শাখা কীর্তনখোলা নামে বরিশাল শহর পশ্চিম তীরে রেখে দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে নলছিটি উপজেলা পর্যন্ত কীর্তনখোলা নামে পরিচিত এবং পরবর্তী প্রবাহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে পরিচিত হয়ে সর্বশেষ হরিণঘাটা নামে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। শায়েস্তাবাদ থেকে নলছিটি পর্যন্ত নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২১ কিমি এবং প্রস্থ আধা কিলোমিটার। ব্রিটিশ আমলে নদীটি খুব প্রশস্ত, গভীর ও খরস্রোতা ছিল। সে সময় বরিশাল শহরকে লবণাক্ততা এবং বন্যার পানি থেকে রক্ষার জন্য যে বাঁধ দেওয়া হয় (যা বর্তমানে বাঁধ রোড নামে পরিচিত) তাতে দেখা যায়, কীর্তনখোলা নদী প্রায় ১ কিমি প্রশস্ত ছিল। প্রায় এক শতকের মধ্যে চরা পড়ে নদীর প্রশস্ততা অর্ধেকে নেমে এসেছে। গভীরতা, প্রবাহ, স্রোতও অনেক কমে গেছে। নদীটি ভাঙনপ্রবণ এবং প্রচুর পলি বহন করে।

 

জাফর খান

সর্বশেষ খবর