অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা ও বাসস্থান মানুষের প্রধান চারটি মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান নামের কিম্ভূতকার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে এসব মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু করেন। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন অঙ্গুরিত হয় তৎকালীন পূর্ববাংলার মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণের তাগিদ থেকে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতেই বঙ্গবন্ধু লক্ষ্মীপুরের চর পোড়াগাছা গ্রাম সফর করেন এবং সেখানকার ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের কর্মসূচি নেন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যাকান্ডের পাশাপাশি সে স্বপ্ন প্রকল্পেরও অপমৃত্যু ঘটে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সরকারপ্রধানের দায়িত্ব হাতে নেওয়ার পর গৃহহীনদের গৃহদানের কর্মসূচি আশ্রয়ণ প্রকল্প গ্রহণ করেন। বর্তমান সরকারের আমলে গৃহহীনদের গৃহদানের প্রকল্প দুনিয়াজুড়ে প্রশংসা অর্জন করেছে। গত বুধবার আরও ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলার ভূমিহীন গৃহহীনদের বিনামূল্যে বাড়ি বিতরণের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে আওয়ামী লীগের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাঁর দল দেশবাসীকে একটি উন্নত ও সুন্দর জীবন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বলেছেন, নৌকায় ভোট দিয়ে দেশবাসী স্বাধীনতা পেয়েছিল। নৌকায় ভোটের কারণে আজ ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ ঘর পেয়েছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের দ্বিতীয় রাউন্ডের চতুর্থ ধাপে ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করার ফলে সারা দেশে ২১টি জেলা ও ৩৩৪টি উপজেলা গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত হয়েছে। যারা গৃহ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তাদের উদ্দেশে বলেছেন, এসব বাড়ি তাদের মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। তিনি তাদের বাড়িঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। গৃহহীনদের গৃহদানে সমাজের অবস্থাপন্নদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গৃহহীনদের গৃহদানের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের বিশ্বাস, যারা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন তারা নিজেদের পাশাপাশি জাতিকে এগিয়ে নিতেও কাক্সিক্ষত অবদান রাখবেন।