শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

যষ্টিমধু

যষ্টিমধু

যষ্টিমধু কমবেশি অনেকে ছোটবেলায় খেয়েছেন। গলা খুসখুস করলে তার ঘরোয়া তাৎক্ষণিক উপশমের জন্য এটি প্রত্যেক ঘরেই থাকত। এখনো হয়তো অনেক ঘরে এটি আছে। আবার নেইও। তবে আজকাল ভেষজ ঔষধির চাহিদা বেশ বেড়েছে। সর্দিকাশি, ঠান্ডা লাগা, গলাব্যথা- এসবের হাত থেকে রক্ষা পেতে। তাই ঘরে ঘরে এখন কাঢ়া বানিয়ে খাওয়ার চল হয়েছে। তাতে অনেকে দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচের সঙ্গে যষ্টিমধুও দিচ্ছেন। যারা দিচ্ছেন না বা যারা কাঢ়াই খাচ্ছেন না তাদের জন্য বলে রাখা ভালো, এসবের গুণাগুণ কিন্তু অনেক। যষ্টিমধু হলো গাছের শেকড়। এতে অনেক বায়োঅ্যাক্টিভ কম্পাউন্ড রয়েছে। এটি আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হয়। এটি টুকরো করে চিবিয়ে খাওয়া যায়, পাউডার হিসেবে খাওয়া যায়, চা হিসেবেও খাওয়া যায়। যেভাবেই হোক এটি খেলে যে সমস্যা থেকে উপশম পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে- *স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ : পরিস্থিতিটাই এমন যে প্রায় সময়ই মানুষ স্ট্রেস বা মানসিক চাপে আচ্ছন্ন হয়ে থাকেন। এতে যষ্টিমধু সাহায্য করতে পারে। মলিকিউলার অ্যান্ড সেলুলার এন্ডোক্রিনোলজি নামক মেডিকেল জার্নালের প্রতিবেদনে আছে, এটি ভীষণভাবে স্ট্রেস হর্মোন কর্টিসল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। কাশি বা কফ, গলাব্যথা, হাঁপানি ও ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি হলো শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা ও তার কারণ। এসবের চিকিৎসায় যষ্টিমধু ব্যবহার করা যেতে পারে, এ কথা বলেছেন এক চিকিৎসক। আসলে ব্যাকটেরিয়া-সৃষ্ট শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশন প্রশমিত করতে পারে যষ্টিমধু। এটি ফুসফুস থেকে শ্লেষ্মা দূর করে। ব্রঙ্কিয়াল স্প্যাজম বা ব্রঙ্কিয়াল টিউবের মাংসপেশির সংকোচনকে শিথিল করতে পারে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। ফুড কেমিস্ট্রি নামক জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যষ্টিমধু শরীর থেকে ক্ষতিকর ফ্রি-র‌্যাডিকেল দূর করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও উন্নত করে। বুকজ্বালা, পাকস্থলীর আলসার, কোলাইটিস, গ্যাস্ট্রাইটিস, পাকস্থলীর ভিতরে প্রদাহ ও পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহজনিত সমস্যায় যষ্টিমধু ব্যবহার করা হয়। এটি আলসারেটিভ কোলাইটিস বা আন্ত্রিক প্রদাহ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। এভিডেন্স-বেসড কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড আলসারেটিভ মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় পাওয়া  গেছে, ডিগ্লাইসিরাইজিনেটেড যষ্টিমধু পাকস্থলীর আলসার নিরাময়ে কার্যকর। অর্থাৎ এটি প্রশান্তিদায়ক ও প্রদাহরোধী। যষ্টিমধু যেভাবেই ব্যবহার করা হোক না কেন এটি ত্বকের উপকার করে। চিকিৎসকের মতে, যষ্টিমধু একজিমা, সোরিয়াসিস, প্রদাহ, সানবার্ন, পায়ের ছত্রাকজনিত সমস্যা নিরাময় করে। ত্বকের ফোলা ও চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে যষ্টিমধুর নির্যাস থেকে প্রস্তুত ওষুধ কাজে লাগে। যষ্টিমধু একটি মাল্টিপারপাস হার্ব। এটি দাঁত ও মাড়িকেও সুস্থ রাখে।

                আফতাব চৌধুরী

সর্বশেষ খবর