ডেঙ্গুর থাবা কিছুতেই সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিদিন গড়ে এক ডজন মানুষ। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত একাধিক চিকিৎসকও প্রাণ হারিয়েছেন। সাধারণ মানুষ যে এই ভাইরাসের কাছে কতটা অসহায় তা সহজেই অনুমেয়। দেশে ডেঙ্গুজ্বরের প্রাদুর্ভাবের ইতিহাসে এ বছর সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৬৪ জন। আগস্টের ১০ দিনেই মারা গেছেন ১১৩ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭৮ হাজার ২৮ জন। বৃহস্পতিবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৫৯ জন, মারা গেছেন ১২ জন। বৃহস্পতিবার আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৯৭ আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৮৬২ জন ডেঙ্গু রোগী। দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৯ হাজার ৭৯০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৪ হাজার ৪৬০ এবং অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালে ৫ হাজার ৩৩০ জন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৭৮ হাজার ২৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৯ হাজার ৯১১ এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩৮ হাজার ১১৭ জন। আক্রান্তের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৭ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৫ হাজার ১৬৮ এবং ঢাকার বাইরে ৩২ হাজার ৭০৬ জন। ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটছে বেপরোয়াভাবে এডিস মশার বংশবিস্তারের কারণে। এ বিষয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরের সিটি কর্মকর্তারা কুম্ভকর্ণের ঘুমে সময় পার করায় সর্বনাশ অনিবার্য হয়ে উঠেছে। ডেঙ্গু হয়ে উঠেছে সাক্ষাৎ আতঙ্কের নাম। আমরা আশা করব, ডেঙ্গুর আগ্রাসন থামাতে রাজধানীসহ দেশের নগর এলাকাগুলোতে সিটি কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মশা নিধন কর্মসূচি চালানো হবে। এ কাজে স্বেচ্ছাসেবীদের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করা দরকার।