রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

দুই সিটির সেবা খাত

কথা ও কাজের মিল ঘটাতে হবে

‘ভাত দেওয়ার মুরোদ নেই কিল মারার গোঁসাই’ প্রবচনটি গ্রাম বাংলায় খুবই প্রচলিত। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রেও প্রবাদটি বেশ প্রাসঙ্গিক। প্রতিবারই সিটি নির্বাচনে যারা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তারা ঢাকাকে তিলোত্তমা নগরী করার স্বপ্ন দেখান। কিন্তু রাজধানীর বাসিন্দাদের আহাজারি এখন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই কেউ কথা রাখেনি কবিতার মতো। জনসংখ্যার দিক থেকে ঢাকা বিশ্বের অন্যতম এক মেগাসিটি। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আয়তন ৩০৫ দশমিক ৪৭ বর্গকিলোমিটার। সবশেষ বিবিএস তথ্য অনুযায়ী সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাস করে ১ কোটি ২ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮২ জন। জীবিকার তাগিদে এসব মানুষের সিংহভাগ ঢাকায় বসবাস করে। মশা, ভাঙা সড়ক, জলাবদ্ধতা, বায়ুদূষণসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত তারা। নির্বাচনের সময় মেয়র প্রার্থীরা সব ধরনের সেবা দেওয়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে স্মৃতি হয়ে যায় এসব প্রতিশ্রুতি। নাগরিক দুর্ভোগ না কমালেও তিন বছরে ঢাকার দুই সিটিতে করের খাত বৃদ্ধি পেয়েছে অন্তত ২৮টি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তিন বছরে ১৯টি কর খাত বাড়িয়েছে। এর মধ্যে রিকশা লাইসেন্স ফি, ইমারত নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণের জন্য আবেদনের ওপর, নগরীতে ভোগ, ব্যবহার বা বিক্রির জন্য পণ্য আমদানির ওপর। নগর থেকে পণ্য রপ্তানির ওপর, টোল জাতীয় কর ইত্যাদি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন তিন বছরে নয়টি কর খাত বাড়িয়েছে। এর মধ্যে মোবাইল টাওয়ার, ইমারত নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণের জন্য আবেদনের ওপর কর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ট্রেনিং সেন্টার। মেলা ও বাণিজ্যিক প্রদর্শনীর ওপর ফিস, টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার ইত্যাদির ওপর, বাজারের ওপর ফি, এয়ারপোর্ট এবং রেলস্টেশন থেকে কর ইত্যাদি। কর বৃদ্ধিতে দুই সিটি কর্তৃপক্ষ অসামান্য কৃতিত্ব দেখালেও নাগরিক সেবা একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। ঢাকা ক্রমেই হয়ে উঠছে যানজটের শহর। বায়ুদূষণের শিরোপা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর দুই সিটির কর্তারা। জলাবদ্ধতার অভিশাপ বাড়ছে বই কমছে না। আর মশার কামড়ে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নগর কর্তাদের গুণকীর্তনই জানান দিচ্ছে। এ দুরবস্থা থেকে রক্ষার একমাত্র পথ কথা ও কাজের মধ্যে মিল ঘটানো।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর