সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

কলঙ্কিত ২১ আগস্ট

গ্রেনেড হামলাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন

একুশে আগস্ট দেশের ইতিহাসের এক কলঙ্কিত দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ’৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলে চার জাতীয় নেতার খুনের ঘটনা, ৭ নভেম্বর সেনা কর্মকর্তাদের নিধন এবং ’৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জিয়াউর রহমানের হত্যাও ছিল হত্যা ও ষড়যন্ত্রের অপরাজনীতির পরিণতি। ’৯০ সালে দৃশ্যত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেও নিষ্ক্রান্ত হয়নি ষড়যন্ত্রের হোতারা। ’৯৬ সালের নির্বাচনে ’৭৫-পরবর্তী ধারার রাজনীতির পরাজয় হয়। ক্ষমতায় আসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সমৃদ্ধ দল। কিন্তু ২০০১-এর নির্বাচনের আগে ও পরে বিস্তৃত হয় ষড়যন্ত্রের থাবা। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশে আইয়ামে জাহেলিয়ার কসরত চলে। শাহ এ এম এস কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টারের মতো শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা হত্যার শিকার হন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো যশস্বী সংসদবেত্তা অল্পের জন্য বেঁচে যান ঘাতকের গ্রেনেড হামলা থেকে। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর প্রকাশ্য সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় হত্যার চেষ্টা চলে। এ ঘটনায় আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ নেতা-কর্মী নিহত হন। এ হত্যাকান্ডের পর ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কর্মকান্ড ছিল রহস্যজনক। গ্রেনেড হামলার মদদদাতা বলে পরিচিত বিশেষ ভবনের অধীশ্বর ও তার সাঙ্গোপাঙ্গদের আড়াল দিতে জজ মিয়া নাটকেরও অবতারণা হয়। ক্ষমতা চিরস্থায়ী ও মুক্তিযুদ্ধের পতাকাবাহীদের নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াসে কারা জড়িত ছিল তা আজ দিবালোকের মতো স্পষ্ট।  ২১ আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনার পর তা ধামাচাপা দিতে মামলার আলামত লোপাট করার চেষ্টা চলে সরকারিভাবে। তবে মেঘ দিয়ে যেমন সূর্য ঢাকা যায় না তেমন ২১ আগস্টের দুর্বৃত্তদের চেহারা লুকানো সম্ভব হয়নি। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে ইতোমধ্যে ১৯ জনের মৃত্যুদন্ড ও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করেছেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে আসামিপক্ষ। আমরা আশা করব, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। নেপথ্য নায়কদের চেহারা উন্মোচনে এ মামলার রায় প্রাসঙ্গিক বলে বিবেচিত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর