২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পর ১৯ বছর কেটে গেলেও এ-সংক্রান্ত মামলার এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলে থাকার সময় তাঁকে হত্যার জন্য যে হামলা চালানো হয়েছিল সে হামলার বিচার ১৯ বছরেও সম্পন্ন না হওয়া দেশের বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতারই পরিচায়ক। স্মর্তব্য, ১৯ বছর আগে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে চালানো হয়েছিল ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা। ২৪ জন নিহত ও ৫ শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় বিচারিক আদালত রায় দিয়েছেন পাঁচ বছর আগে। এরপর থেকেই ডেথ রেফারেন্স ও আপিল নিষ্পত্তির অপেক্ষায় মামলা দুটি রয়েছে হাই কোর্টে। সংশ্লিষ্ট হাই কোর্ট বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি অসুস্থ থাকায় শুনানি বন্ধ রয়েছে। ফলে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও অন্য আসামিদের আপিল নিষ্পত্তি না হওয়ায় রায় কার্যকর করা যাচ্ছে না। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর দেওয়া বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ আসামিকে মৃত্যুদন্ড দেন ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১। একই অপরাধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ আসামিকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়। আরও ১১ আসামিকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। বিচারিক আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল- তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করাই ছিল হামলার উদ্দেশ্য। স্মর্তব্য, হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্সের পাশাপাশি ২২টি আপিল ও ১২টি জেল আপিল দায়ের হয়েছে। অন্যদিকে বিস্ফোরক মামলায় ১৭টি আপিল দায়েরের পাশাপাশি ১২টি জেল আপিল দাখিল করেছেন মামলা দুটির আসামিরা। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দন্ডাদেশ যথা শিগগিরই বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। কাপুরুষোচিত ওই হামলায় ২৪ জনের প্রাণহানিসহ ৫ শতাধিক মানুষ আহত হন। তাদের অনেকে এখনো দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। আদালতের দন্ডাদেশ কার্যকর হলে ক্ষতিগ্রস্তরা অন্তত সান্ত্বনা খুঁজে পাবেন।