বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

মানব পাচার

অপরাধীদের আইনের আওতায় আনুন

ইতালি পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে পণবন্দি করে কয়েক দফায় হতভাগ্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা আদায় করেছে মানব পাচার চক্রের সদস্যরা। তারপর আরও ১৬ লাখ টাকার দাবিতে চালিয়েছে বর্বর নির্যাতন। টাকা দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় সৈয়দ মুশাহিদ আলীকে শেষ অবধি খুনও করেছে মানুষ নামধারী শকুনেরা। সৈয়দ মুশাহিদ আলীর স্ত্রী সানোয়ারা সাংবাদিকদের বলেছেন, তাদের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে। ২০২০ সালে পাশের গ্রাম জগন্নাথপুরের পাড়ারগাঁও গ্রামের আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের সদস্য শাহীন আহমেদের স্ত্রী তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বলেন, তার স্বামী লিবিয়ায় থাকেন ও জনশক্তি রপ্তানির কাজ করেন। শাহীনের স্ত্রী ও তার সহযোগীদের কথায় তার স্বামীকে ৭ লাখ টাকায় ইতালি পাঠানোর চুক্তি হয়। প্রথম কিস্তিতে নেন ৩ লাখ টাকা। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর তার স্বামীকে প্রথমে দুবাই পাঠানো হয়। দুবাই থেকে লিবিয়ায় পাঠানোর পর নেওয়া হয় আরও ৩ লাখ টাকা। এরপর শুরু হয় মুশাহিদের ওপর নির্যাতন। তাকে জিম্মি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং খুন করে লাশ সমুদ্রে ফেলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কয়েক দফায় পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া হয় ২২ লাখ টাকা। এরপর দাবি করা হয় আরও ১৬ লাখ টাকা। ২১ জুন মানব পাচার চক্রের সদস্য শাহীন লিবিয়া থেকে ইমু অ্যাপসের মাধ্যমে ফোন করে জানায়, মুক্তিপণের ১৬ লাখ টাকা না দেওয়ায় নির্যাতন করে মুশাহিদকে মেরে ফেলেছে।

সানোয়ারার অভিযোগ, এরপর তিনি শাহীনের স্ত্রী ও তার সহযোগীদের কাছে তার স্বামীকে জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় হলেও ফেরত চান। কিন্তু তারা উল্টো এ নিয়ে কথা বললে সন্তানসহ তাকে অপহরণ, খুন ও গুমের হুমকি দেয়। এ অবস্থায় তিন শিশুসন্তানকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এ বিষয়ে দিরাই থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানা পুলিশও মামলা নেয়নি। গত মঙ্গলবার সিলেট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ মুশাহিদ আলীর স্ত্রী সানোয়ারা বেগমের অভিযোগ গুরুতর। বিস্ময়কর হলো দিরাই থানা পুলিশের মামলা না নেওয়া। যা মানব পাচারকারীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কই স্পষ্ট করছে। এ ব্যাপারে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর