শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বেলাই বিলের কান্না

অপদখলকারীদের নিরস্ত করুন

গাজীপুরের বৃহত্তম জলাধার বেলাই বিল তার অস্তিত্ব হারাতে চলেছে। দখলদারদের নখরাঘাতে কাঁদছে এই প্রাকৃতিক জলাধার। গাজীপুরের বেলাই বিল স্মরণাতীতকাল থেকে দেশি মাছের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। আয়তনে দেশের সবচেয়ে বড় মহানগরী গাজীপুরকে বন্যা ও জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষায় অনন্য ভূমিকা পালন করে ৫০ বর্গকিলোমিটারের এই বিল। বেলাই বিলের পানি দিয়ে চাষাবাদ করেন জেলার চার উপজেলার কৃষক। বেশ কয়েকটি নদী ও খালের সঙ্গে যুক্ত থাকায় পরিবেশগত দিক দিয়ে বিলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বিলটি দখলদারের হিংস্র থাবায় পড়েছে। উচ্চ আদালত ও সরকারের বিভিন্ন দফতরের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আবাসনের সাইনবোর্ড বসিয়ে রাতের আঁধারে চলছে ভরাট কার্যক্রম। অনুমোদন ছাড়াই ম্যাপ দেখিয়ে হচ্ছে প্লট বিক্রি। এতে হুমকির মুখে পড়বে জীববৈচিত্র্য। কাল্পনিক আবাসন প্রকল্পের লেআউট দেখে প্লট কিনে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। টঙ্গী-কালীগঞ্জ মহাসড়কসংলগ্ন পুবাইলে বেলাই বিলের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তেপান্তর, নর্থ-সাউথ গ্রুপ ও কে এম ইউসুফ আলী অ্যান্ড গংয়ের সাইনবোর্ড লাগানো। সড়কের পাশে বিলের কিছু অংশ ভরাট করে তেপান্তরের বড় সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। পাশেই বিলের মধ্যে রাস্তা করে পানির ভিতরে তৈরি হচ্ছে নর্থ-সাউথ গ্রুপের পাকা স্থাপনা। একই জায়গায় ‘কে এম ইউসুফ আলী অ্যান্ড গং’ লেখা নতুন সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে সম্প্রতি। পুবাইল ব্রিজ থেকে সড়কের পাশ দিয়ে ড্রেজারের পাইপ টেনে আনা হয়েছে ওই এলাকা পর্যন্ত। দখলদাররা বিলের এক বড় অংশ ইতোমধ্যে ভরাট করেছে। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রশাসনের লোকজন ড্রেজার বন্ধ করে দেন। সাইন বোর্ডগুলো তুলে ফেলেন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও রাতের আঁধারে বিল ভরাটের কাজ চলছে। এলাকার সন্ত্রাসী টাইপের লোকজনের যোগসাজশে কৃষককে তাদের জমি বিক্রি করতে বাধ্য করা হচ্ছে। গাজীপুর মহানগরীর পরিবেশ সুরক্ষা এবং জেলার চার উপজেলার কৃষি কাজের সেচের পানির উৎস বেলাই বিল ভরাটের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ তৎপর হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর