রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

সুতা সংকট

তাঁত বোর্ডের বিভীষণদের ধরুন

সুতা সংকটে সারা দেশের তাঁতশিল্প ধ্বংসের মুখে। তন্তুবায়ীরা এ সংকটের জন্য বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের তিন কর্মকর্তার সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন। তন্তুবায়ীদের অভিযোগ, ওই সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির কলকাঠি নাড়ছে। কৌশলে পলিয়েস্টার সুতা আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় সারা দেশে দেশি তাঁতশিল্প ধ্বংসের পথে। ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ৬০ ভাগের বেশি তাঁত। শক্তিশালী সিন্ডিকেটটি কৌশলে সাধারণ তাঁতিদের জন্য সুতা আমদানি বন্ধ রেখে নিজেরা এলসির মাধ্যমে ব্যবসা করে শত শত কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে এমন অভিযোগও করেছেন তারা। সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার তাঁতি সমিতির নেতারা বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী, তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন স্থানে কয়েক দফা লিখিত অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাননি। সংকট সমাধানে তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যানের কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচিও দিয়েছেন তারা। সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্যমূল্যে সুতা না পেয়ে বঞ্চিত হচ্ছেন ১ হাজার ৩৫০ তাঁতি সমিতির লাখ লাখ তাঁতি। সরকার নির্ধারিত রেয়াতি দামে সুতা আমদানির জন্য কয়েক শ তাঁতি সমিতির আবেদন তাঁত বোর্ডে জমা পড়লেও তাদের দুই বছরের অধিক সময় ধরে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে প্রায় দিনভর বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন জেলার কয়েক শ তাঁতি সমিতির নেতৃবৃন্দ। সেখানে তাঁরা চেয়ারম্যানের কাছে সিন্ডিকেটের সদস্যদের নাম ধরে ধরে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করেন। তাঁত বোর্ডের সুস্পষ্ট বিধান থাকার পরও বোর্ডে চার বছর ধরে তাঁতিদের কোনো প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে ২৫ লাখ দেশি তাঁতের মধ্যে ১৫ লাখই এখন বন্ধ। তাঁতশিল্পের উন্নয়নে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড। এ বোর্ডের যেসব কর্মকর্তা নিজেরা লাভবান হওয়ার আশায় সংকট সৃষ্টির জন্যই যে সিন্ডিকেট গঠন করেছেন তাকে বিভীষণসুলভ ভূমিকা বললেও কম বলা হবে। তাঁত বোর্ডের তাঁতিস্বার্থবিরোধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা আশা করব মন্ত্রণালয় এ ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতার পরিচয় দেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর