সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বন্যা নিয়ে ভয় নয়

দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে

বাংলাদেশ নদ-নদীর দেশ। বন্যা এ দেশের সাংবার্ষিক এক সমস্যা। জানা ইতিহাসের এমন কোনো বছর নেই যে বছর বন্যা আঘাত হানেনি বাংলাদেশ নামের ভূখন্ডে। এ বছরও দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের উত্তরাঞ্চলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে চলেছে। এরই মধ্যে কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও ধরলাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়ছে এবং এসব এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে চরের আমন ও শাক-সবজির খেত। অনেকে গবাদিপশু নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার নদে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি আবারও বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিস্তার পানিতে তলিয়ে গেছে আমন খেত। বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে অন্তত ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উত্তরাঞ্চলে বন্যার ছোবল আঘাত হেনেছে উজান থেকে আসা পানির চাপে। শুষ্ক মৌসুমে উজানে তিস্তা নদীর পানি প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশ অংশে দেখা দেয় পানির সংকট। কোথাও কোথাও দেশের অন্যতম বৃহত্তম এই নদীর অবস্থা দাঁড়ায় ‘পার হয়ে যায় গরু পার হয় গাড়ি।’ উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে তিস্তা অববাহিকার বন্যা নিয়ন্ত্রণে নদীর স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে উজানে পানি প্রত্যাহার বন্ধ করতে হবে। তিস্তার পানির সমবণ্টন নিশ্চিত করাও জরুরি। পাশাপাশি নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। বন্যা প্রতি বছর উত্তরাঞ্চলে যে ক্ষয়ক্ষতি ঘটায় তাতে লাগাম দেওয়ার প্রকৃষ্ট উপায় হলো ওই এলাকার সব নদ-নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো। বন্যা নিয়ে ভয় নয়। সরকারের পাশাপাশি দুর্গতজনদের পাশে দাঁড়াতে হবে সমাজের বিত্তবানদের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর