শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঢাকামুখী স্রোত

বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে

বিশ্বের যেসব মহানগরীর জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে ঢাকা তার মধ্যে একটি। প্রতিদিন ঢাকার বাসিন্দা হিসেবে যোগ হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ জন। প্রতি মাসে ঢাকার জনসংখ্যা বাড়ছে ৫১ হাজার। বছরে ৬ লাখেরও বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজধানীতে প্রতি একরে ৭০০ থেকে ৮০০ মানুষের বসবাস। কিন্তু এই নগরীর চারটি এলাকা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ। এ চারটি এলাকা হচ্ছে-লালবাগ, বংশাল, গেন্ডারিয়া এবং সবুজবাগ। এসব এলাকায় প্রতি একরে বাস করে প্রায় ৮০০ মানুষ। মেগা সিটির মানদন্ড অনুযায়ী প্রতি একর আয়তনে জনসংখ্যা থাকার কথা ১২০ জন। বিশ্লেষকদের মতে, সব ধরনের সেবা রাজধানীকেন্দ্রিক হওয়ায় মানুষ ভিড় জমাচ্ছে ঢাকায়। সরকারি অফিস- আদালত, সেরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংকের হেড অফিস, ভারী ও মাঝারি শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা কেন্দ্রীভূত হওয়ায় মানুষের সামনে কোনো বিকল্প পথ নেই। এ ছাড়া শিল্প-কলকারখানার অধিকাংশই রাজধানী এবং এর আশপাশে হওয়ায় বিশাল জনগোষ্ঠীর বাস রাজধানী এবং সংলগ্ন এলাকায়। ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হাই কোর্ট, আবহাওয়া অধিদফতর, বন ভবন, খাদ্য ভবন, পানি ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় সহজেই স্থানান্তর বা বিকেন্দ্রীকরণ করা যায়। কিন্তু কোনো সরকার এতে আগ্রহ দেখায়নি। এ ছাড়া বিভাগ ও অন্য জেলাগুলোতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করলে মানুষ আপনা-আপনিই ঢাকা থেকে স্থানান্তরিত হবে। এতে ধীরে ধীরে বাসযোগ্যতা ফিরে পাবে। বিশ্বপরিসরে ঢাকার বাইরে জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে দুবাইয়ের আয়াল নাসির এলাকা। সেখানে প্রতি একরে ৬০০ লোকের বাস। তৃতীয় অবস্থানে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি। সেখানে প্রতি একরে বাস করে ৪৬০ জন। চতুর্থ অবস্থানে মুম্বাইয়ের জাভেরি নামক এলাকা। রাজধানীর জনসংখ্যা স্পুটনিক গতিতে বাড়ার কারণে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীও তাদের বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ঘিঞ্জি এলাকায় পরিণত হচ্ছে। যানজট, বায়ুদূষণ-শব্দদূষণ থেকে বাঁচার একমাত্র পথ ঢাকামুখী স্রোতের অবসান ঘটানো।

সর্বশেষ খবর