মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা

সমস্যা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে কিছুতেই মুক্তি পাচ্ছে না বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। ভারী বৃষ্টি হলেই নগরের বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে যাচ্ছে পানির নিচে। শনি ও রবিবার ভারী বৃষ্টির পর একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। এভাবে চলতি বছর ১০ বার চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতার শিকার হলো। একই সঙ্গে ঘটেছে পাহাড় ধসের ঘটনা। চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর আইডব্লিউ কলোনিতে পাহাড় ধসে সাত মাস বয়সী মেয়েশিশু ও তার বাবার মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঘটে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। আইডব্লিউ কলোনির পাহাড়টি প্রায় ৫০ ফুট উঁচু, সেখানে রিটেইনিং ওয়ালও আছে। পাহাড়ের নিচে কাঁচাঘর বানিয়ে নিম্নআয়ের লোকজন থাকতেন। রবিবার সকালে অতিবৃষ্টিতে পাহাড় থেকে মাটি ধসে নিচে ঘরের ওপর পড়ে। তাতে একই পরিবারের চারজন চাপা পড়লে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং অপর দুজন এখন চিকিৎসাধীন। জলাবদ্ধতার কারণে চট্টগ্রামে পূর্বনির্ধারিত এইচএসসি পরীক্ষা এক ঘণ্টা পর শুরু হয়। চট্টগ্রামসহ তিন বোর্ডের প্রথম চারটি পরীক্ষা জলাবদ্ধতার কারণে স্থগিত করা হয়েছিল। রবিবার যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোমরপানি, কোথাও হাঁটুপানি মাড়িয়ে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে আসতে হয়েছে। প্রবল বর্ষণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনসহ অন্যান্য যান চলাচল বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২টি বিভাগের ২৪টি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পাহাড়ধস নিয়ে সতর্ক থাকতে ক্যাম্পাসে অবস্থিত কলোনিগুলোতে মাইকিং করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভারী বর্ষণে পুরোপুরি তলিয়ে যায় চট্টগ্রামের ফতেয়াবাদ স্টেশন। এ কারণে রবিবার শহর থেকে কোনো শাটল ট্রেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে যায়নি। অন্যদিকে বৃষ্টিপাতে হাটহাজারীর নন্দীরহাট প্লাবিত হওয়ায় চট্টগ্রাম-হাটহাজারী মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা অবসানে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করার পরও এর ফাঁদ থেকে বেরোতে পারছে না নগরবাসী। এ দুর্ভোগের অবসানে কোথায় কোথায় ত্রুটি তা নির্ধারণ করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর