বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডলার সংকট

মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ

ডলারের বাজারে অস্থিরতা কিছুতেই কাটছে না। অনেক ব্যাংক যথাসময়ে আমদানির এলসি দায় পরিশোধ করতে পারছে না। আবার কোনো কোনো ব্যাংক নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দরে ডলার বেচাকেনা করছে। এতে বাজারে অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হচ্ছে। ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমছে এবং মূল্যস্ফীতি অনিবার্য হয়ে উঠেছে। গত দুই বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। সোজা কথায় যেসব মানুষের সঞ্চয় ব্যাংকে গচ্ছিত ছিল তাদের অর্থের প্রকৃত মূল্য দুই বছরের ব্যবধানে কমেছে ২০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ দুই বছরে ব্যাংক থেকে তারা যে মুনাফা পেয়েছেন, টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে তার চেয়ে বেশি। যারা সারা জীবনের সঞ্চয় রেখে দিয়েছিলেন বাড়ি নির্মাণের জন্য, টাকার দাম কমে যাওয়া এবং পণ্যের মূল্যস্ফীতিতে তারা চোখে শর্ষে ফুল দেখছেন। উচ্চ আমদানি ব্যয়ের প্রভাব পড়ছে ভোক্তার কাঁধে। পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে এবং ব্যয় হ্রাস পেয়েছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেরও বৈদেশিক ঋণ রয়েছে। টাকার অবমূল্যায়ন হওয়ায় ডলারে একই পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে বেশি টাকা খরচ হচ্ছে, যা টাকার ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। দুই বছর ধরে দেশে ডলার সংকট চলছে। চলমান সংকটের জন্য দেশে ডলারের চাহিদা ও সরবরাহে ব্যাপক ব্যবধান থাকার বিষয়টি অনেকাংশে দায়ী। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স কম আসা এবং হুন্ডিতে লেনদেন ডলার সংকট আরও বাড়িয়েছে। ডলারের বাজার স্থিতিশীল করতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২৫ মাসে প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। এর মধ্যে গত অর্থবছরে ১ হাজার ৩৫০ কোটি এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭৬২ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে। ডলারের উচ্চ চাহিদার কারণে সরকার নির্ধারিত দামে সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মানুষ ছুটছে কার্ব মার্কেটের দিকে। বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। এ অবস্থার অবসানে হুন্ডি বন্ধে শক্ত হতে হবে। বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধেও নিতে হবে উদ্যোগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর