কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডেঙ্গু। প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা। চলতি মাসে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যু সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গু ছড়ায় এডিস মশা। ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে মশা নির্মূলের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে এ নিয়ে ব্যাপকভাবে সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান, এমনকি হাসপাতালের ভিতরে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভিতরে ব্যাপকভাবে এডিসের লার্ভা পাওয়ার খবর প্রচার হয়েছে দেশের প্রায় সব গণমাধ্যমে। আতঙ্কের কথা শুধু শহর নয়, এখন গ্রামপর্যায়েও ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি ঢাকার বাইরে যে সার্ভেগুলো হয়েছে, সব জায়গাতেই এডিস মশা এলবোপিকটাসের পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে। রোগতত্ত্ববিদরা বলছেন, ঢাকার বাইরের বাস্তব পরিস্থিতির কোনো চিত্র কারও জানা নেই। ফলে সামনের দিনগুলোতে গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বাড়তে পারে। এ ছাড়া এখন দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়ে যাওয়ায় মৃত্যুঝুঁকিও বাড়ছে। রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতেই হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার-নার্স ও কর্মচারীরা। তার ওপর প্রতিদিনই ঢাকার বাইরে থেকে ডেঙ্গু রোগী আসছে। রোগীর এই বাড়তি চাপে রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোর ডাক্তার-নার্সরা এখন দিশাহারা। ডেঙ্গু টেস্ট ও চিকিৎসা ব্যয় নিয়েও হিমশিম খাচ্ছে রোগী ও তার পরিবার। বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল। প্রতিদিন প্লাটিলেট পরীক্ষা, ডেঙ্গু শনাক্তের টেস্ট, সিভিসিসহ অন্যান্য পরীক্ষায় যাচ্ছে অনেক টাকা। অনেক ক্ষেত্রে একই পরিবারের একাধিক সদস্য ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ায় সবার খরচ মেটাতে নিঃস্ব হচ্ছে বহু পরিবার। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৬৯ জন। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আশার বাণী শোনালেও ডেঙ্গু যে আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে তা এ পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি অবশ্যই দূর করতে হবে। নইলে সামনে আরও বড় বিপর্যয় আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।