শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন

জাহাঙ্গীর কবির নানক

শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন

বাংলার আকাশে যতবারই বিজয়ের লাল সূর্যের লালিমা দৃশ্যমান হয়েছে, ততবারই আঁধারের ঘনঘটা এসে বাংলার আলোর আভাকে নিভিয়ে দেওয়ার প্রয়াস চালিয়েছে। ঠিক যেমন ১৯৭১ সালে হাজার বছরের শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতি তার লালিত স্বপ্নসাধ স্বাধীনতাকে আলিঙ্গন করেছিল, ঠিক তার পরক্ষণেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যা করে আবারও বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ঘাতকরা চিরতরে অস্তমিত করবার পাঁয়তারা করেছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্ব ততদিনে মিশে গিয়েছিল বাংলার পর্বত, বায়ু, গিরি, জলে। বঙ্গবন্ধু নিজের আদর্শ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সমগ্র বাংলার পথে প্রান্তরে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেও তাঁর আদর্শের টিকিটি পর্যন্ত টলাতে পারেনি সেই স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক চক্র।

১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাকান্ড কোনো সেনা বিদ্রোহ ছিল না। সুদীর্ঘ সময়ের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রের আঁচল বেঁধে আগস্ট ট্র্যাজেডিকে মঞ্চস্থ করা হয়েছিল দেশি-বিদেশি ও আন্তর্জাতিক মহলের প্রত্যক্ষ মদদে। আরও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এ-দেশীয় কিছু খুনিকে ভাড়া করে ঘটিয়েছিল ওই হত্যাকান্ড। সেই আইএসআই ও আন্তর্জাতিক কুচক্রী মহলের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিলেন তৎকালীন উপসেনাপ্রধান খুনি জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধু হত্যার ছক কষতে ১৯৭৪ থেকে হত্যার আগ পর্যন্ত প্রায়ই মেজর জিয়ার সঙ্গে ব্যক্তিগত বৈঠকে বসেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র স্টেশন চিফ ফিলিপ চেরি। সাংবাদিক লরেন্স লিফশুলজ ২০১১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘দৈনিক ইত্তেফাকে’ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সিআইএ’র তত্ত্বাবধানে ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডে প্রধান ভূমিকা পালন করেন জিয়া। জিয়ার সহযোগিতা ছাড়া ওই হত্যাকান্ড ঘটতই না। জিয়া অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কর্নেল রশীদের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন এবং রশীদকে সব সময় আশ্বস্ত করেন, তিনি তাদের সঙ্গে আছেন।’ কাজেই জেনারেল জিয়া যে পর্দার আড়াল থেকে এই নারকীয় ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের নেপথ্যপ্রণেতা আজ তা দিবালোকের মতো সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।

১৫ আগস্ট প্রত্যুষে যখন শোনা যাচ্ছিল মসজিদের আজানের ধ্বনি ‘আসসলাতু খাইরুম মিনান নাউম’, তখনই কামানের গোলা ও গুলির শব্দে ঢাকাবাসীর ঘুম ভাঙল। কিছুক্ষণের মধ্যেই রেডিওমারফত জানা গেল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করেছে। আমি, আমার বন্ধুপ্রবর কাসেম ও ছালাম শহীদ (কানাডাপ্রবাসী) ছুটে গেলাম সেরনিয়াবাত সাহেবের বাসায়। সেখানে যেতেই গেটে একজন পুলিশ বলল, এখানে সব শেষ করে দিয়েছে। আপনারা তাড়াতাড়ি চলে যান। আমরা ছুটে গেলাম আমির হোসেন আমু ভাইয়ের বাসায়। তাঁকে নিয়ে আমরা বেরিয়ে গেলাম। ততক্ষণে খুনিদের অনুগত কিছু সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান নিয়েছে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে। তাদের আশঙ্কা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ হতে পারে।

ঢাকা মেডিকেলে এসে বরিশালের ডা. আরিফের (এখন কানাডাপ্রবাসী) সহযোগিতায় আমরা অ্যাপ্রোন পরে ডাক্তারের বেশে আহতদের দেখতে যাই। প্রথমে হাসনাত ভাইয়ের স্ত্রী শাহানারা বেগমের সঙ্গে দেখা হলো, ক্ষতবিক্ষত অবস্থা। তিনি বললেন, সব শেষ হয়ে গেছে। তোমরা সরে পড়, বিপদ ঘটবে তোমাদের। ডা. আরিফ আমাদের দ্রুত সরে যেতে বললেন। আমরা সরে গেলাম। ফিরে গেলাম আমু ভাইয়ের গোপনে থাকা জায়গায়। সেখানে যেসব খবর আসছিল তার মধ্যে ভালো খবর ছিল না। শুধু বিশ্বাসঘাতকতার খবর। তারা জানাল রক্ষীবাহিনীর দু-তিন জন ডিস্ট্রিক্ট লিডারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শহীদের সঙ্গে শত চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হলো না। পর দিন সকালে আমু ভাই জাতীয় সংসদের হোস্টেলে কয়েকজন এমপির কাছে পাঠালেন। সেখানে যা দেখেছিলাম তা বলা যাবে না (এখন ডালে চালে মিশে একাকার হয়ে গেছে)। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম বরিশালে ১৫ আগস্ট সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগের একটি অংশ আনন্দ মিছিল ও সব জায়গা থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ভাঙচুর করে অসম্মানজনকভাবে। তখন থেকেই কাদের ভাই, আ খ ম জাহাঙ্গীর ভাই, মমতাজ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করি সংগঠিত হওয়ার জন্য; মধুর ক্যান্টিনে আনাগোনা চলত।

২১ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কাসেম, মোহন লুকুসহ কয়েকজন ঝটিকা মিছিল করি, ‘বঙ্গবন্ধুর রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘এক মুজিবের রক্ত থেকে লক্ষ মুজিব জন্ম নেবে’, ‘খুনি তুই যেই হও বাংলা তোর ছাড়তে হবে’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, অ্যাসেম্বলি হলের ছাদের ওপর একটি কোনার রুমে বৈঠক হতো। কাদের ভাই আসতেন, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিকও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন। মানিকগঞ্জের মহিউদ্দিন ভাই ও তার পুরান ঢাকার ছোট ছাপাখানাকে ভুলে গেলে আত্মপ্রবঞ্চনা করা হবে। কারণ এখান থেকেই লিফলেট ছাপিয়ে আমরা সর্বত্র বিলি করতাম।

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার সংবাদে সারা দেশ যখন শোকজর্জর তখন খুনি মোশতাক বঙ্গভবনে সংসদ সদস্যদের ডাকলেন। আমরা তখন এমপিদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চিঠি দিয়ে তাদের সতর্ক করেছি। বলেছিলাম, বঙ্গভবনে মোশতাকের ওই সংসদীয় সভায় উপস্থিত হওয়া যাবে না। তবু অনেকেই সেই সভায় উপস্থিত হন। শুরু হলো দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার এক নোংরা খেলা। বিভ্রান্ত করা হয়েছিল বিশ্ববাসীকে। বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য সেদিন খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। আমরা গুটিকতক মুজিবসৈনিক সেদিন প্রতিরোধ গড়েছিলাম কিন্তু নেতৃত্বের আত্মসমর্পণের কারণে সেই প্রতিরোধ ধোপে টিকেনি।

অনেক নেতার বাড়িতে গিয়েছি দূর দূর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। সারা দেশের ছাত্রলীগের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করেছে। সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বটতলা থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত কালো পতাকা শোকর‌্যালি। ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকান্ড। ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লব। এ নিয়ে নানা কথা রয়েছে (এখন বলা যাবে না)। ১৯৭৬-এর জুলাইযে স্বল্প পরিসরে ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে গোপন সভা হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় বাংলাদেশে কোথায় কী হবে। বরিশালে হরতাল পালন করব জাতির পিতার প্রথম শাহাদাতবার্ষিকীতে। বরিশালে যাই, লিফলেটসহ সবকিছু নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করি। ছাত্রলীগ নেতা শহীদ খান (মৃত), শহীদ সেরনিয়াবাত, সুভাষ রায় (মৃত), হেমায়েত হাওলাদার, সামসুদ্দিন খাজা, শহীদ বিশ্বাস, গাওসে আলম লাল, আনিসুর রহমান দুলাল (বর্তমান বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর), নিয়াজ মোস্তফা, শিরাজ শিকদারসহ হরতাল পালন, লিফলেট বিলিসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন; অদম্য সাহসের পরিচয় দেন। ১৯৭৬-এর ১৫ আগস্টের আগে ১০ আগস্ট একটি গোপনে বৈঠক করার সময় বিএম কলেজ আঙিনা থেকে প্রচুর পুলিশ ও সাদা পোশাকধারীরা আমাকে গ্রেফতার করে; তখন আমি বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ওই দিন ছিল শবেবরাতের রাত, সারা রাত সদর কোতোয়ালি থানায় ফ্যানের রিঙের সঙ্গে উল্টোভাবে ঝুলিয়ে আমার ওপর অত্যাচার চালায়। আমার চিৎকারে থানার পার্শ্ববর্তী মানুষরা শবেবরাতের নামাজও পড়তে পারেনি।

আমার গ্রেফতারের পর ক্ষুব্ধ ও রুষ্ট এবং অদম্য সাহসী আমার বাবা বজলুর রহমান এসপি-ডিসিকে বলেছিলেন, আমার ছেলেকে আমি বা ওর মা জীবনে একটি চড়ও দিইনি আর আপনারা পবিত্র শবেবরাতের রাতে শিয়াল-কুকুরের মতো ওকে পেটালেন, এটি ভালো করলেন না।

এক তেজস্বী নারীর কথা যদি না বলি তবে অন্যায় হবে। তিনি সৈয়দা আরজুমান বানু নার্গিস, আমার স্ত্রী। আমি জেলে থাকতে তার ছোটবোনের বিয়ে হয়ে গেছে, কিন্তু তিনি আমার জন্য অপেক্ষা করেছেন। তিনি যে চিঠিগুলো জেলখানায় পাঠাতেন তা ছিল আমার প্রাণশক্তি। শুধু তাই নয়, আমার পরীক্ষার জন্য তার বান্ধবীর করা নোট ও শীতের কষ্ট নিবারণের জন্য কুসিকাঁটায় নিজ হাতে করা উলের মাফলার, হাফ সোয়েটার, ফুল সোয়েটার জেলখানায় পাঠিয়েছেন।

আগস্ট মাস এলেই যেন হন্তারকদের রক্তে হায়েনাদের মতো হিংস্রতা টগবগ করে। আগস্ট এলেই যেন শীতল মস্তিষ্কের ষড়যন্ত্রের জলছাপ দেশজুড়ে দানা বাঁধে। ১৫ আগস্টের মতো ট্র্যাজেডি ঘটানোর মতলবে, আওয়ামী লীগকে ইতিহাসের পাতা থেকে চিরতরে মুছে ফেলতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাবণের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দেশি-বিদেশি দোসর খালেদা-তারেক-নিজামীরা। সেদিন সন্ত্রাস, বোমাবাজি, জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। হঠাৎ শুরু ভয়ংকর গ্রেনেড হামলা। ২১ আগস্টে ভয়াল হামলায় নিক্ষিপ্ত অথচ ফোটেনি এরকম যেসব গ্রেনেড পাওয়া গিয়েছিল তার সবই ছিল ‘আর্জেস গ্রেনেড’। গ্রেনেডের গায়ে লেখা ছিল পাকিস্তান অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি। বুঝতে আর বাকি থাকে না কাদের মদদ আর কোন আঁতাতে এই নারকীয় কর্মযজ্ঞ সাধিত হয়েছে। হামলার পরে আমি ও মির্জা আজম সুধাসদনে গেলাম। দেখি নেত্রী সোফায় বসা আর সোফার হাতলে বসে নেত্রীর গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন ছোট আপা (শেখ রেহানা)। আমাকে দেখে বলছেন, ‘বাঁইচা আছো’। এরই মধ্যে নেত্রীর নিরাপত্তায় পুরো সুধাসদন কর্ডন করে রেখেছেন আমাদের নেতা-কর্মীরা। আমি আপাকে বললাম ওদের (বিএনপি-জামায়াত) আর ছাড়ব না। ক্ষমতায় থাকতে দেব না। অনির্দিষ্টকালের হরতাল দিয়ে সব কলাপস করে দেব। ওদের পতন না ঘটা পর্যন্ত হরতাল চলবে। নেত্রী  বললেন, ‘আমি রাজনীতি করি মানুষের জন্য। আগে আমার মানুষকে বাঁচাও। হরতাল হলে তারা মুভমেন্ট করতে পারবে না। রাজনীতি পরে।’ বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বললেন, ‘আমার জন্য আর কত মানুষ জীবন দেবে? ওদের বাঁচাও। আমার আর রেহানার সমস্ত গহনা বিক্রি করে হলেও ওদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করো।’ নেত্রীর নির্দেশে আমাদের চিকিৎসকদের নিয়ে তিনটি চিকিৎসক টিম করে হাসপাতালে নামিয়ে দিতে বললেন। কারণ ড্যাবের ডাক্তাররা (বিএনপিপন্থি ডাক্তার সংগঠন) হাসপাতালগুলো থেকে সরে গেছে, আহতদের কোনো চিকিৎসা তারা দেবেন না। আমরা আমাদের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বললাম। তারা সবাই যার যার জায়গা থেকে আহতদের চিকিৎসায় নেমে পড়লেন।

রাত সাড়ে ১১টায় ফের সুধাসদনে যাই। নেত্রী বললেন, ‘কালকে তোমরা দুইজনে ওই এলাকাটা (সমাবেশস্থল) একটু সংরক্ষণ কোরো।’ পর দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখলাম, সেখানে পুলিশ রয়েছে। তারা আমাদের দলীয় অফিসে ঢুকতে দেবে না। আমরা চিৎকার করে বলতে লাগলাম, ‘মরাকে আর মারার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। গুলি করেন বুকে। তার পরও ঢুকব।’ একসময় ওয়াকিটকিতে কার সঙ্গে যেন কথা বলল পুলিশ। আমরা ধাক্কা দেওয়ার পর তারা সরে গেল। আমরা যখন ঢুকলাম, তখনও রক্ত শুকায় নাই। ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে আছে। যুবলীগ অফিসে ঢুকে দেখি আঙুল পড়ে আছে। পা ফেলতে পারছি না। হাতের আঙুল, নখ, কাঁচা গোশত, হাজার হাজার জুতা পড়ে আছে। লাল ব্যানার ছিঁড়ে লাঠিতে বেঁধে ট্রাকসহ পুরো এলাকা আমরা ঘিরে রাখলাম। গ্রেনেডের চিহ্নিত জায়গাগুলোয় লাল পতাকা টানিয়ে দিলাম। ওই দিন রাতেই (২২ আগস্ট) সিটি করপোরেশনের গাড়ি সব আলামত ধুয়ে ফেলল। ট্রাকটা নিয়ে গেছে। কোনো আলামত তারা রাখেনি। সবকিছু নিশ্চিহ্ন করে রেখেছে।

বঙ্গবন্ধু এ দেশকে করতে চেয়েছেন ‘সোনার বাংলা’। বিজ্ঞানমনস্ক, কুসংস্কারমুক্ত, স্বনির্ভর সমাজধন্য দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। পিতা মুজিবের স্বপ্নের সেই অগ্রসর বাংলাদেশ অর্জনের জন্য বিরামহীন চেষ্টায় তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর রক্ত যাঁর ধমনিতে প্রবাহিত, যে রক্ত কোনো দিন পরাভব মানে না। সেই রক্তের উত্তরাধিকার শেখ হাসিনার হাতেই সফলতা অর্জিত হবে। আল্লাহর রহমতে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে।

 

লেখক : প্রেসিডিয়াম সদস্য, আওয়ামী লীগ

সর্বশেষ খবর