মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শব্দদূষণ

আফতাব চৌধুরী

শব্দদূষণ বর্তমানে দেশের প্রতিটি নগরীতে নীরব ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। কেবল নগরীতে নয়, উপজেলা সদরেও মাত্রাতিরিক্ত শব্দের আক্রমণে মানুষের স্বাভাবিকতা ব্যাহত হচ্ছে। সম্প্রতি একটি দৈনিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শব্দদূষণজনিত রোগের আক্রমণে প্রায় সব বয়সের বিপুলসংখ্যক লোক নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হতে চলেছে। প্রতিবেদনে পরিবেশিত তথ্যানুসারে দেশে বর্তমানে ১ কোটির বেশি মানুষ শব্দদূষণজনিত রোগে ভুগছে। মহানগরীতে এ ধরনের রোগে আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক। শব্দদূষণের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় প্রতি হাজারে একজন শিশু বধির হয়ে জন্ম গ্রহণ করছে এবং জন্মের পর হাজারে দু-তিন জন শিশু বধিরতার শিকার হচ্ছে। শব্দদূষণের ফলে শিশু-কিশোর, ছাত্রছাত্রীদের মস্তিস্ক আক্রান্ত হচ্ছে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় তাদের মন-মেজাজ সর্বদা বিক্ষিপ্ত থাকছে। ফলে বিদ্যা সাধনা, লেখাপড়া প্রভৃতি অত্যাবশ্যকীয় কাজের প্রতি তাদের মনোযোগ আশঙ্কাজনক হারে ব্যাহত হচ্ছে। শব্দদূষণের মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে যানবাহন চলাচলের অনিয়ন্ত্রিত শব্দ, মাইক-লাউড স্পিকার প্রভৃতির ব্যবহার। যানবাহন চলাচলের সময় সৃষ্ট শব্দ এ মুহূর্তে আমাদের জন্য হয়তো বা সহজে পরিহারযোগ্য নয়। মাঠে-ময়দানে, সভা-সমিতিতে উন্মুক্ত স্থানে মাইকের ব্যবহার অপরিহার্য। এসব বিষয় প্রচুর শব্দদূষণ সৃষ্টি করে নিঃসন্দেহে। কিন্তু গোদের ওপর বিষফোড়ার মতো আবাসিক এলাকায় বিবেচনাহীনভাবে, বেপরোয়াভাবে মাইকের অপব্যবহারে সর্বস্তরের মানুষকে শব্দদূষণের শিকার হতে হচ্ছে। আবাসিক এলাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে গিয়ে সময়ের প্রতি কোনো প্রকার খেয়াল না রেখে মাইক বাজানো হয়। কি সকাল, কি দুপুর, কি বিকাল, কি সন্ধ্যা কোনো প্রকার বাছবিচার না করেই চড়া ভলিউমে মাইক বাজানো হয় অপ্রয়োজনীয়ভাবে এবং দীর্ঘ সময় ধরে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মাগরিবের পর থেকে আবাসিক এলাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে মাইক বাজানো শুরু হয় এবং তা এমনকি রাত ১১টা-১২টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

 

সর্বশেষ খবর