বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নকল ভেজাল ওষুধ

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ১৪৭টি দেশে। এ পরিসংখ্যান গর্বের শুধু নয় অহঙ্কারের। কারণ যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোতেও বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হয়। ওষুধের মানের ব্যাপারে যাদের রক্ষণশীল ভূমিকা দুনিয়াজুড়েই প্রশংসিত। বাংলাদেশে মানসম্মত ওষুধ তৈরি হচ্ছে এবং ইউরোপ আমেরিকার মানুষও বাংলাদেশের প্রতি আস্থা রাখছে এটি একটি আলোকিত দিক। তবে আলোর নিচে রয়েছে ঘোরতর অন্ধকার। নকল ভেজাল ওষুধ তৈরিতেও বাংলাদেশ এগিয়ে। আর এই এগিয়ে থাকার পিছনে ওষুধ প্রশাসনের দায়ও কম নয়। নকল ভেজাল ওষুধ তৈরিতে জড়িত নামসর্বস্ব কিছু ওষুধ কোম্পানি এবং তথাকথিত ইউনানি ও হারবাল ওষুধ কোম্পানিগুলো। দেশে ইউনানি ওষুধের লাইসেন্স রয়েছে ২৮৪টি- যা কোনোভাবেই এক ডজনের বেশি হওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। এসব তথাকথিত প্রতিষ্ঠানের আড়ালে হুবহু ‘আসল’ মোড়কে গ্যাস্ট্রিক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগের নকল ওষুধ বাজারে ছাড়া হচ্ছে। যা দেখে ভোক্তাদের আসল-নকল পরখ করা অনেকটাই দুঃসাধ্য। স্বনামধন্য এবং পরিচিত ওষুধ কোম্পানির ওষুধগুলোই নকল করা হয় বেশি। নকল ওষুধ সাধারণত রুগ্ন কারখানা বা ইউনানি-হারবালের মতো কারখানাগুলোতে উৎপন্ন হয়। রাতের শিফটে এসব নকল ওষুধ উৎপাদন করে ভেজাল সিন্ডিকেটের কুশীলবরা। কারখানা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় চক্রের তালিকাভুক্ত কিছু ফার্মেসির কাছে পৌঁছানো হয় এসব ভেজাল ওষুধ। মিটফোর্ড কেন্দ্রিক কিছু অসাধু ফার্মেসি নকল ভেজাল চক্রের সঙ্গে জড়িত। সেখান থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এ ভেজাল ওষুধ। গ্রামগঞ্জে ক্রেতার হাতে পৌঁছে যাচ্ছে প্রাণঘাতী এসব নকল ওষুধ। নকল ওষুধের কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে এবং মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়ছে। গুটিকয়েক নকল ব্যবসায়ীর জন্য দেশের ওষুধ ব্যবসার সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আশার কথা প্রস্তাবিত ওষুধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩-এ নকল ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিপণনের অপরাধকে জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস কড়া আইন অপরাধ দমনে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর