বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বেপরোয়া হুন্ডি ব্যবসা

জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করুন

হুন্ডি ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিচ্ছে। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করছে এমন দেশপ্রেমবর্জিত লোকের সংখ্যা এ দেশে খুব একটা কম নয়। অসৎ আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী ও অসৎ রাজনীতিকরা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করে এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। বর্তমান সরকারের প্রায় ১৫ বছরের সিংহভাগ সময় টাকার মূল্যমান বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে ধরে রাখা সম্ভব হলেও গত পৌনে দুই বছরে ভিন্ন বাস্তবতার সম্মুখীন হচ্ছেন নাগরিকরা। এর পেছনে দায়ী যেনতেনভাবে অবৈধ পথে অর্থ আয়ের সুযোগ এবং সে অর্থ বিদেশে পাচারের ঘটনা। বাংলাদেশে মানি লন্ডারিং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু কাজির গরুর অবস্থান কেতাবে থাকলেও গোয়ালে নেই। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের অভিমত, মানি লন্ডারিং মামলার কাক্সিক্ষত ফল না আসার কারণ আইনি জটিলতা, তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা, আদালতে আসামিপক্ষের সময় ক্ষেপণ, সমন্বয়ের অভাব ও উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ। তবে এ বিষয়ে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের মনোভাব জিরো টলারেন্স থাকা উচিত। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখা উচিত। প্রয়োজনে মানি লন্ডারিং মামলার বিচারের জন্য পৃথক ট্রাইব্যুনাল গঠন করার কথা ভাবতে হবে। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত মানি লন্ডারিংয়ের ১১৭টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৩টির তদন্ত চলছে। ৩২টি মামলার চার্জশিট এবং দুটি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। তদন্তাধীন ৮৩ মামলায় গ্রেফতার হয়েছে ১১ আসামি। অনুসন্ধানাধীন রয়েছে হাজারের বেশি অভিযোগ। গত ২০ বছরে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে ৭৫২টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে ৩৯৭ মামলায়। ৩৫৫ মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। আর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে ১০ মামলায়। ঢাকার আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলোর মধ্যে এই সময়ে ৫৬টির রায় হয়েছে। এর মধ্যে সাজা হয়েছে ৪৪ মামলায়। মানি লন্ডারিংয়ের মামলার ধীরগতি এবং আইনের ফাঁকফোকরের সুযোগে আদালতের স্থগিতাদেশ অপরাধীদের ক্ষমতার দাপটই প্রকাশ করছে। তা যাদের আরও সাহসী করে তুলছে। অর্থ পাচার বন্ধে অপরাধীদের সাহসী হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় বাদ সাধতে হবে। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বনের বিকল্প নেই।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর