শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিক্ষাঙ্গনে যৌন হয়রানি

ওদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে

একটা জাতি কতটা সভ্য তা নির্ভর করে সে দেশের নারী সমাজ কতটা মর্যাদা ভোগ করে তার ওপর। বাংলাদেশে ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩২ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংসদ নেতা ও বিরোধী দলের নেতার মর্যাদাবান পদ ধরে রেখেছেন মহীয়সী নারীরা। এ মুহূর্তে সরকারপ্রধান, সংসদে বিরোধী দলের নেতা, সরকারি দলের উপনেতা ও স্পিকার পদ অলংকৃত করছেন যেসব ব্যক্তিত্ব তাঁরা সবাই নারী। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ যে সাফল্য দেখিয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক পশ্চিমা দেশের জন্যও বিস্ময়। এটি মুদ্রায় এক পিঠ যা আলোচ্ছটা ছড়াচ্ছে বিশ্বজুড়ে। অন্য পিঠ ঘন অন্ধকারের। বাংলাদেশ নিন্দিত নারী নির্যাতনের দেশ হিসেবে। যৌন হয়রানিতেও এগিয়ে এ দেশ। দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে দিনকে দিন যৌন হয়রানি বেড়েই চলছে। স্কুল-কলেজ, মাদরাসা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কোথাও থেমে নেই বিকৃত মনোভাবাপন্নরা। উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি থাকলেও এর কার্যকারিতা কেবল কাগজে-কলমে। শিক্ষাঙ্গনে যৌন হয়রানিতে ছেলে শিক্ষার্থী ছাড়াও শিক্ষকরাও এখন এসবে অভিযুক্ত হচ্ছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্থানীয়ভাবে যৌন হয়রানির মতো ঘটনার মীমাংসা হচ্ছে। কখনো কখনো মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, জেলা ও থানা শিক্ষা অফিসে দু-একটি অভিযোগ জমা পড়লেও শিক্ষা কর্মকর্তারা তদন্ত করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি থাকার কথা থাকলেও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এ বিষয়ে আগ্রহ নেই। যৌন হয়রানির ঘটনায় সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকলেও বেসরকারির ক্ষেত্রে সে সুযোগ নেই। যৌন হয়রানি বন্ধে বিকৃত মনোভাব সৃষ্টি করে যে মানসিকতা তার বিরুদ্ধে লড়তে হবে। বাংলাদেশে নারী শিক্ষার প্রধান বাধা বখাটেরা। বাল্যবিয়ের  পেছনেও এসব মানুষ শকুনদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার বিষয়টি জড়িত। এ প্রেক্ষাপটে শিক্ষাঙ্গন হোক আর নারীর কর্মক্ষেত্র হোক যৌন হয়রানি রোধে কঠোর হতে হবে। নিজেদের সভ্য সমাজের মানুষ হিসেবে ভাবতে হলে এ বিষয়ে সক্রিয় হওয়ার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর