সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

জি২০ জোটের ঘোষণা

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে নৈতিক চাপ

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে জি২০ সম্মেলন এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হলো যখন রাশিয়া ও ইউক্রেনের আত্মঘাতী যুদ্ধ সারা বিশ্বকে দুই শিবিরে বিভক্ত করেছে। জি২০-তেও এনেছে বিভক্তি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন যোগ দেননি এ সম্মেলনে। তার ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ছিলেন দিল্লি সম্মেলনে অনুপস্থিত। তারপরও কূটনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়ে জি২০-এর চেয়ারপারসন ভারত জোটের দিল্লি ঘোষণায় সংঘাত এড়িয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে অভিন্ন অবস্থান নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে সৃষ্ট বিভক্তির কারণে জি২০ সম্মেলনে সর্বসম্মত যৌথ ঘোষণা নেওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় ছিল। শেষ পর্যন্ত আয়োজক ভারত শনিবার সম্মেলনের প্রথম দিনেই যৌথ ঘোষণা গৃহীত হওয়ার কথা জানিয়ে চমক দেখিয়েছে। ঘোষণায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভোগান্তির কথা থাকলেও রাশিয়ার নিন্দা না করায় তা সম্ভব হয়েছে। প্রথমবারের মতো জি২০ জোটের সভাপতি হওয়ার পর থেকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোর সম্পর্ক তৈরির জন্য কাজ শুরু করে ভারত। তুলনামূলকভাবে অনুন্নত দক্ষিণ বিশ্বের জন্য নিজেকে নেতৃত্বের স্থানে তুলে ধরতেও তৎপর ছিল তারা। সেই ধারাবাহিকতায় মোদি আফ্রিকান ইউনিয়নকে জি২০ জোটের স্থায়ী সদস্য পদ গ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। এ অন্তর্ভুক্তিকেও এবারের সম্মেলনের ঐতিহাসিক অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। যৌথ ঘোষণায় খাদ্য, সার, জ্বালানিসহ নানা বিষয় উঠে এসেছে। এতে জলবায়ু পরিবর্তন ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায়ও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জি২০ জোটের নয়াদিল্লি সম্মেলন ও সম্মেলন শেষে যৌথ ঘোষণা বিশ্বরাজনীতিতে ভারতের নতুন অভিষেক ঘটিয়েছে। সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোও ছিল তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আস্থার সম্পর্ক তারও নিবিড় হবে। যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার সমালোচনা এড়িয়ে সৃষ্ট সংকট তুলে ধরার প্রয়াস যুদ্ধ বন্ধে নৈতিক চাপ সৃষ্টি করবে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশটির প্রতি। যা একটি বড় অর্জন বলে বিবেচিত হবে।

সর্বশেষ খবর