মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফরাসি প্রেসিডেন্টের সফর

দুই দেশের সম্পর্ক আরও উচ্চতায়

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বাংলাদেশ সফরকে দুই দেশের বহুমাত্রিক সম্পর্কের দ্বার উন্মোচন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট গত রবিবার বাংলাদেশ সফরে আসেন এবং সোমবার বিকালে ফিরে যান স্বদেশের উদ্দেশে। ১৯৯০ সালে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরার বাংলাদেশ সফরের ৩৩ বছর পর কোনো ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরকে নানা কারণে গুরুত্বের চোখে দেখা হচ্ছে। ৩৩ বছরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বেড়েছে দ্রুতলয়ে। গত কয়েক বছরে ফ্রান্স ও বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ তৈরি করেছে ফ্রান্সের মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান থালেস। ম্যাক্রোঁর সফরকালে দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের জন্য চুক্তি সই হয়েছে। দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১৯৯০ সালে ২১০ মিলিয়ন ইউরো থেকে বর্তমানে ৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ ৩৩ বছরে প্রায় ২০ গুণ বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে দুই দেশের। ফ্রান্স বাংলাদেশি পণ্যের পঞ্চম বৃহত্তম বাজার। ফরাসি প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে প্রকৌশল, জ্বালানি, মহাকাশ ও পানিসহ বেশ কয়েকটি খাতে কাজ করছে। এ পর্যন্ত পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনসহ গুরুত্বপূর্ণ ১৫ প্রকল্পে ফ্রান্স বাংলাদেশকে ১ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ইউরো ঋণ ও ৩১ মিলিয়ন ইউরো অনুদান অনুমোদন দিয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ফরাসি প্রযুক্তি ও জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দুই দেশের সরকারপ্রধানের বৈঠকে। বাংলাদেশ ফ্রান্সের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসের কাছ থেকে দুটি কার্গোসহ ১০টি উড়োজাহাজ কিনতে রাজি হয়েছে। ফ্রান্সে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধিরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সফরের পথ ধরে। ফ্রান্স বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হলেও শর্তের জালে ফেলার পশ্চিমা স্টাইল থেকে দেশটি দূরে অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এমন অবস্থানকেই যে কাক্সিক্ষত মনে করা হয় তা সহজেই বোধগম্য। বাংলাদেশের উন্নয়নে ফ্রান্স অতীতের মতো আগামীতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে- এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর